ইউরোপিয়ান ফুটবলের মহোৎসব আজ । একদিকে তারুণ্যের জয়গানে জেগে ওঠা ‘লা রোজা’ খ্যাত স্পেন, অন্যদিকে গতিময় ফুটবলের নবরূপে ধরা দেওয়া ইংল্যান্ড।
আজ রোববার (১৪ জুলাই) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে নামবে স্পেন ও ইংল্যান্ড। স্পেনের সামনে এবার শিরোপার চূড়ায় ওঠার লড়াই। জার্মানির সঙ্গে যৌথভাবে তিন ইউরো জয়ের রেকর্ডের হাতছানি, অন্যদিকে ইংল্যান্ডের দুঃখ মোচনের স্বপ্নিল রাত।
দুই দলের শক্তিমত্তার বিচার করলে অবশ্য স্পেন এগিয়েই থাকবে। ফাইনালের মঞ্চে পা রাখার পথে স্পেন টানা ছয় জয়ে মাতিয়ে দিয়েছে আসর। লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা একে একে হারিয়েছে শক্তিশালী সব প্রতিপক্ষকে। এই তালিকায় গ্রুপ পর্বে আছে শিরোপাধারী ইতালি, ২০১৮ বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া ও আলবেনিয়া।
নকআউট পর্বে তারা বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছে দারুণ লড়াকু জর্জিয়া, ইউরোর স্বাগতিক জার্মানি এবং বিশ্বকাপের সবশেষ আসরের রানার্সআপ ফ্রান্সের। মোদ্দা কথা, এবারের আসরে ফেভারিটের তালিকায় থাকা প্রায় সব দলকেই হারিয়েছে স্প্যানিশরা। শেষ লড়াইয়ে তাদের সামনে ইংল্যান্ডের কঠিন পরীক্ষাই দেওয়ার কথা।
ডেনমার্ক ও স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে ড্র করে কোনোমতে গ্রুপ পর্ব পেরিয়েছিল ইংলিশরা। নকআউটেও ‘থ্রি লায়ন্স’দের গর্জন শোনা যায়নি। শেষ ষোলোতে জুড বেলিংহ্যাম ও হ্যারি কেইনে ভর করে স্লোভাকিয়া বাধা পার হয় গ্যারেথ সাউথগেটের দল। কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জয়, সেমিতে ওলি ওয়াটকিন্সে রক্ষা।
দুই দলের পার্থক্য বিবেচনা করলে স্পেন যোজন যোজন এগিয়ে। তবে লড়াইটা যখন ফাইনালের মঞ্চে, তখন কাউকে ঠিক পিছিয়ে রাখার উপায় নেই। লামিনে ইয়ামাল কিংবা জুড বেলিংহ্যামদের লড়াইটা থাকছে অবশ্য। ফ্রান্স ম্যাচে ২৫ গজ দূর থেকে চোখ জুড়ানো বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করে ইয়ামাল যা দেখিয়েছেন, তাতে ফাইনালে স্পেনের দিকেই পাল্লাটা হেলে পড়েছে।
দুই দলের খেলোয়াড়দের লড়াইয়ে স্পেনের আছেন ইয়ামাল এবং সঙ্গে নিকো উইলিয়ামসের মতো ক্ষিপ্র গতির দুই উইঙ্গার, সেই সঙ্গে ফাবিয়ান রুইস ও রদ্রির মতো দুর্দান্ত দুই মিডফিল্ডার। দানি ওলমোর কথাই বা বাদ যাবে কেন? দে লা ফুয়েন্তে হাতে কঠিন সব অস্ত্র নিয়েই নামছেন। দানি কারভাহাল ফেরায় স্পেনের স্বস্তির জায়গা থাকছে ঢের।
বিপরীতে ইংল্যান্ড যেন কেমন্ এলোমেলো। আক্রমণভাগে জুড বেলিংহ্যাম ও ফিল ফোডেনের সঙ্গে যোগসাজশটা করতে পারছেন না হ্যারি কেইন। তবে কেইন ফর্মের তুঙ্গে থাকায় কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারেন সাউথগেট। ইংল্যান্ডের মূল ভরসা তাদের রক্ষণ। লুক শ ও কাইল ওয়াকার তাদের দুই মূল ভরসা।
পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, এখন অবধি দুই দেশ মুখোমুখি হয়েছে ২৭ বার। তাতে ইংল্যান্ড জিতেছে ১৪টিতে, স্পেন হেসেছে ১০বার। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দলের সবশেষ লড়াইটি হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর নেশনস লিগের লিগ পর্বে। সেই ম্যাচে ইংল্যান্ড জেতে ৩-২ ব্যবধানে।
পরিসংখ্যান স্রেফ একটা সংখ্যা। ম্যাচ জেতায় স্ট্যামিনা, ট্যাকটিস ও আত্মবিশ্বাস। তাতে স্পেন অনেকখানি এগিয়ে থাকবে। বাকিটার ফয়সালা হবে বার্লিনের আলোকরাঙা রজনীতে।