রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪ ২১ আশ্বিন ১৪৩১
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
পাকিস্তানকে লজ্জাজনক ‘বাংলাওয়াশ’ করে টাইগারদের ইতিহাস
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:১২ PM আপডেট: ০৩.০৯.২০২৪ ৬:৫৪ PM
দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমরা ঠিকই দলকে নিয়ে যান ১৮৫ রানের ল্যান্ডমার্কে। শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন সত্য হলো দ্বিতীয় সেশনে এসে। ব্যাটারদের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পেল ৬ উইকেটের জয়। 

পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট এলেই বাংলাদেশের স্মৃতিতে উঠে আসে মুলতান টেস্টে হারের স্মৃতি। দীর্ঘদিন পর সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির প্রথম টেস্ট। ১০ উইকেটের জয় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার বাংলাদেশকে দিয়েছে টেস্টে পাকিস্তানকে হারানোর স্বাদ। এবার দ্বিতীয় টেস্টেও এলো অসামান্য এক জয়।
চতুর্থ দিনে পেসারদের দাপুটে পারফরম্যান্সের পর জয় ছিল সময় আর ধৈর্য্যের ব্যাপার। ৫ম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এসে এলো সেই ক্ষণ। শেষ দিনে টাইগার ব্যাটারদের ধৈর্য আর ‘কমিটমেন্টে’র সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই। 

আবরার আহমেদের বলে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব আল হাসান। পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে। 
৫ম দিনে বাংলাদেশের আর দরকার ছিল ১৪৩ রান। আগের দিনের ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে এদিন যোগ হলো আরও ১৪ রান। দলীয় ৫৮ রানে জাকির আর ৭০ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান। দুই ওপেনার মিলে ১০ ওভারে রান তুলেছেন পার করেছেন ৫০ এর মার্ক। 

এরপরেই অবশ্য বিপত্তি।  মির হামজার বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন জাকির। জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমান। মিডঅফে আলতো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন শান মাসুদের হাতে। খুররাম পেয়েছেন নিজের প্রথম উইকেট।
অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আর মুমিনুল এরপর খেললেন নিখুঁত টেস্ট ইনিংস। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে শুরুতে খানিক কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই নিজেদের খুঁজে পেয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়ক। ২০ ওভার খেলে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। ম্যাচটাও ততক্ষণে পাকিস্তানের নাগালের অনেকটা বাইরে। 

লাঞ্চের পর শান্ত পারেননি নিজের ইনিংস বড় করতে। সালমান আঘার বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। করেছেন ৩৮ রান। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে তখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন এখন ৫৮ রান।
সেখান থেকে এরপর আর ফিরতে হয়নি বাংলাদেশের। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে বাংলাদেশকে নিয়ে গেলেন জয়ের আরও কাছে। মুমিনুল ফিরলেও সাকিব আল হাসান এসেছিলেন জয় করতে। তাতে বাংলাদেশ আবারও পেল দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ছিল বিদেশে সিরিজ জয়ের স্মৃতি। এবার তাতে যুক্ত হলো পাকিস্তানের নাম।
গতকালের দিনটাই মূলত ভিত গড়ে দেয় জয়ের। তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে হাসান মাহমুদ তুলে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ২১ রানের লিড থাকলেও ব্যাকফুটেই ছিল পাকিস্তান। ৪র্থ দিন বাংলাদেশের পেসাররা ঝরালেন আগুন। নাহিদ রানার গতির সামনে অসহায় পাকিস্তানের টপ আর মিডল অর্ডার। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং স্পেল উপহার দিলেন। 

সঙ্গ দিলেন হাসান মাহমুদ নিজেও। দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান আর সালমান আঘাকে ফিরিয়েছেন। ১৭২ রানে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১৮৫ রান। 
এর আগে লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম ইনিংসে গড়া ১৬৫ রানের বিশ্বরেকর্ড জুটিটাও টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের পালে দিয়েছে বাড়তি হাওয়া। টেস্ট ক্রিকেটে ৫০ এর আগে ৬ উইকেট হারানোর পর ৭ম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড ১৬৫ রানের জুটি গড়েন দুই টাইগার ব্যাটার। লিটন পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। প্রথম ইনিংসের পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ গিয়েছিল ২৬২ পর্যন্ত। 

শান্তকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ফোন
এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত স্বয়ং ফোন পেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের।

এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের সহকারী ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফিস। 

বাংলাদেশের সাবেক এই ওপেনার সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অফিস থেকে মাত্র ফোন পেলাম। শান্তকে ফরওয়ার্ড করে দিয়েছি। বাংলাদেশ দলকে অনেক অনেক অভিনন্দন।’
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক আউয়াল সেন্টার (লেভেল ১২), ৩৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত