বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে গুলি করে হত্যার এক মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
ঢাকার মহানগর হাকিম মো. আলী হায়দার বুধবার সকালে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গত ৩ সেপ্টেম্বর শহীদুল হককে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন করা হলে বিচারক তাকে ৭ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
রিমান্ড শেষে বুধবার সকাল ৭টায় শহীদুল হককে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদন জমা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিউ মার্কেট থানার এসআই মো. বায়েজীদ বোস্তামী। শহীদুল হকের পক্ষে কোনো আইনজীবী এদিন শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না।
রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদনে বলা হয়, “জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মামলার ঘটনার বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই বাচাই করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত কাজ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।”
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক আইজিপিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম মো. আলী হায়দার।
এ মামলার বিবরণে বলা হয়, জুলাই মাসে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে সাবেক আইজিপি শহীদুল হকসহ অন্য আসামিরা আন্দোলন দমনে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
“এরই ফলশ্রুতিতে গত ১৯ জুলাই বিকাল ৫টায় নিউ মার্কেট ১ নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে শত শত সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও গুলি বর্ষণ করা হয়। সে সময় আব্দুল ওয়াদুদ (৪৫) নিউ মার্কেট থানাধীন প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে মাথার পেছনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।”
রিমান্ড শুনানির দিন সাবেক আইজিপি শহীদুল হক নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতে বলেন, "আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমি পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসাবে গড়ে তুলেছি। হত্যা তো দূরের কথা, এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি ন্যায়বিচার চাই।"
শহীদুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি।