ঢাকার ধামরাই উপজেলার কয়েকটি কুল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার এক-একটি গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে কুল। চাষিরা বাগান থেকে কুল ছিঁড়ে ঝুড়িতে রাখছেন। পরে ওই কুল বিক্রির জন্য বাজারে নিচ্ছেন।
ধামরাই উপজেলার আমতা ইউনিয়নের ০৩ নং ওয়ার্ডের আমতা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য কুল চাষী মনির হোসেন জানান, তিনি ইউটিউব দেখে এবং শায়খ সিরাজের প্রতিবেদন দেখে উৎসাহিত হয়ে নিজের বুদ্ধি দিয়ে বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের আপেল কুল উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। প্রথম বছরেই মাত্র দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে তার ৭ বিঘা জমির আপেল কুলের দাম উঠেছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা।
বাসনা গ্রামের আরেক কুলচাষি আলী হোসেন বলেন, কুলগাছ লাগানোর সাত মাস পর থেকে গাছে ফুল আসতে শুরু হয়। ধামরাই উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেয়। আমি তিনবছর ধরে কুল চাষ করি। আপেল কুল, কাশ্মীরি ও নারকেল কুল এই তিন জাতের কুল জমিতে আবাদ করছি।
কুল্লা ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান বলেন, আমি কুল চাষের পাশাপাশি একই জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি এতে বেশ লাভবান হয়েছি। কুল চাষে উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি।
কৃষি বিভাগ বলছে, বাণিজ্যিকভাবে ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় উচ্চফলনশীল জাতের কুল চাষ হয়েছে। বাজারে বল সুন্দরী, আপেলকুল, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরী ও টক-মিষ্টি কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ছোট বড় অনেক বাগান হয়েছে। প্রতি বিঘা কুল বাগানে প্রতিবছর ৩০ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয় এবং বিক্রি হয় প্রায় এক লাখ টাকা। লাভজনক হওয়ায় কুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন ধামরাইয়ের শিক্ষিত ও বেকার যুবকেরা।
এবিষয়ে ধামরাই উপজেলা কৃষি অফিসার আরিফুর রহমান জানান, এই উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল চাষ হয়ে থাকে, মৌসুমি আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার ফলন বেশি হয়েছে,ঢাকার পার্শবর্তী হওয়ায় চাষীরা বাজার মূল্যটা বেশি পাচ্ছে। আর কুল চাষে কুলের পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়, কুল চাষের পর পরই যদি তাদের ব্রান্স গুলা কেটে দেওয়া যায়, পরর্বতী সময় নতুন ব্রান্সে যে কুল আসে সেখানে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়।