নীলফামারীর সৈয়দপুরে শীত, কুয়াশা ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলুখেতে পচন রোগ বা লেট ব্লাইট (নাবি ধসা) দেখা দিয়েছে। বারবার বালাইনাশক স্প্রে করেও তেমন ফল না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন আলুচাষিরা। এসব ওষুধের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙালিপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় কৃষকদের ওষুধ স্প্রে করতে দেখা গেছে। কৃষকরা জানান, খেতে বারবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করছেন। কিন্তু কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে গাছ পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। ফলে পর দিন আবারও স্প্রে করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ তিন থেকে চারবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করেছেন জমিতে। এতে আলুখেত নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কোরাণীপাড়ার কৃষক আমিনূর রহমান জানান, এবছর ২ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। প্রতিটি জমিতে জমিতে শীত ও কুয়াশার কারণে লেট ব্রাইট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের কর্মীরা আমাদের পাশে নেই।
কীটনাশক দোকানের মালিকের পরামর্শে আলুর জমিতে ওষুধ স্প্রে করছি। কিন্ত খুব একটা কাজ হচ্ছে না। উপজেলার খাতামধুপুরের কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের এলাকায় ব্যাপক আকারে আলুখেতে লেট ব্রাইট দেখা দিয়েছে। শীত ও কুয়াশার কারণে প্রতিদিনই জমিতে স্প্রে করতে হচ্ছে। ছত্রাকনাশক ওষুধের যে দাম তাতে কুলাতে পারছি না। সেই সাথে এই ঠান্ডায় শ্রমিকরা কাজ না করায় মহাবিপদে পড়েছি।
উপজেলার বোতলাগাড়ি তালতলা পাড়ার কৃষক মোরসালিন জানান, আক্রান্ত খেতে একাধিকবার বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ছড়িয়েও তেমন কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সব জাতের আলুক্ষেতেই এবার এ রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই আবহাওয়া চলতে থাকলে আলু চাষ করে লাভ দূরের কথা, বীজের টাকাও উঠবে না।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, এবছর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ১ হাজার ২৯২ একর বিভিন্ন জাতের আলুর আবাদ করা হয়েছে। অব্যাহত শীত ও কুয়াশায় কিছুটা ক্ষতি হলেও বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পাশে রয়েছেন।
তিনি বলেন, আলুখেতের জন্য সবচেয়ে বেশি শঙ্কার কারণ ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা বেশি দিন থাকলে আলুখেত ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা সব সময় কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরামর্শ দিচ্ছি। বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলেই এ সমস্যার
সমাধান হয়ে যাবে।