মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ ১০ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫
যৌন নিপীড়নের দায়ে জবির দুই শিক্ষকের শাস্তি
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪, ৮:১৬ PM
যৌন নিপীড়নের দায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক সাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা না করায় একই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের দেওয়া রিপোর্টে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতন প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ সিন্ডিকেট এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দায়ের করা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমি এখানে উপাচার্য হয়ে আসার পর আরেকটি তদন্ত বোর্ড গঠন করে দিয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই সেই রিপোর্ট আমরা হাতে পাবো।

তিনি আরও বলেন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের সাময়িক বহিষ্কার আদেশ নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনার যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে সে বিষয়েও সম্মানিত সিন্ডিকেট সদস্যদের অবহিত করা হয়েছে।

এর আগে শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার পর সোমবার (১৮ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তোলেন ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। এর মধ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন একই বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের ওপর। আর তাকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ তোলেন বিভাগটির চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের ওপর।

গত ১৮ মার্চ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে অভিযোগ দেন মীম। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওই বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন ও বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর ১৯ মার্চ একই অভিযোগে প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন তিনি।

জবাবে আবু শাহেদ ইমন গণমাধ্যমকে জানান তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ কাল্পনিক। মীমের পরীক্ষায় কম নাম্বার পাওয়ার ব্যাপারে চেয়ারম্যান সরাসরি জানিয়ে দেন তিনি (মীম) ক্লাসে অনেক কম উপস্থিত ছিলেন ও অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেননি।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়কদের বিরুদ্ধে আগের চেয়ে আরও বেশি সরব হয়েছে শিক্ষার্থীরা। একটি অভিযোগ বক্স থাকলেও তাতে অভিযোগ জমা দিয়ে কোনো ফল পেতেন না ভুক্তভোগীরা। অবন্তিকা ও মীমের ঘটনার পর থেকে এ বিষয়ে সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে বেশী সচেতন হয়েছেন।

পাশাপাশি আর কোন শিক্ষার্থীদের যেন অবন্তিকার মতো আত্মহত্যা করতে না হয় সে বিষয়ে আরও সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত