ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আহতরা রাজধানীতে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করছেন। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন আহতরা এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে তারা হাসপাতালের সামনের আগারগাঁও থেকে শ্যামলীমুখী সড়ক বন্ধ করে দেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন আহতদের মধ্যে পাঁচ শতধিক ব্যক্তি পঙ্গু (নিটোর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি আহতের চিকিৎসা ভাতাও দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার। তারা একটি ফ্লোরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে চলে যান। অন্যদের সঙ্গে কথা না বলায় বা খোঁজ না নেওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হন। ক্ষোভ থেকে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
কয়েকজন বিক্ষোভকারী ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম নিটোর পরিদর্শনে আসেন। তারা চতুর্থ তলার পুরুষ ওয়ার্ডে এক ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে ঘুরে দেখে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু তিন তলার ওয়ার্ডে থাকা আহতদের দেখতে না যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। একপর্যায়ে তারা নিচে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়ি আটকে দেন। তাদের মধ্যে কেউ একজন গাড়ির সামনে বসে পড়েন। আরেকজন গাড়ির ছাদে উঠে পড়েন।
পরে চুপিসারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার অন্য একটি গাড়িতে বেরিয়ে যান। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই গাড়ি ও প্রটোকলে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি আটকে দিলে একপর্যায়ে তারা রাস্তায় নেমে আসেন।
অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থী মশিউর অর্ণব বলেন, আমরা কথা বলতে গেলেও আমাদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদেরকে সামান্য ট্রিটমেন্ট দিয়ে তিন মাস বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমার পায়ে নয়টি অপারেশন করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত সুস্থ হতে পারিনি।
আহত আরেক শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের এক একটা ওয়ার্ডে ৪৮ জন করে মানুষ আছে। কিন্তু ওনারা ওনাদের পছন্দের বিদেশি পাঁচজন সাংবাদিক নিয়ে এসেছেন এবং আমাদের দেশীয় কোনো সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারা দু-একজনের সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ (এডিসি) মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, জুলাই ও ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে তারা হাসপাতালের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করছেন। আমরা আহত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের জন্য আলোচনা করছি। দ্রুতই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।