পুলিশের ভাষ্য, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে ওই তরুণ শাসাচ্ছিলেন।
ঢাকার পল্লবী থানায় গভীররাতে এক তরুণের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসিতে ওসিসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন।
সোমবার রাত পৌনে ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে ওসি নজরুল ইসলাম জানান।
ওই তরুণের নাম আব্দুর রাজ্জাক ফাহিম জানিয়ে ওসি বলেন, “২২-২৩ বছরের ওই তরুণ আমার রুমে ঢুকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, খুন হয়েছে- আপনারা কী করছেন বলে জানতে চায়। পরে তাকে বলি, আমরা চেষ্টা করছি- আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে।”
তখন ওই তরুণ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, “আপনারা কিছুই করছেন না; খুন হয়েছে জানেন না।”
ওসি বলেন, “কোথায় খুন হয়েছে, আমি জানি না বলে তার কথার জবাব দেওয়ার পর তরুণটি বলেন, ‘আপনার ডিউটি অফিসার জানে, আর আপনি জানেন না’ বলে আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।”
তখন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষে যাওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল বলেন, “এ ব্যাপারে ডিউটি অফিসারকে জিজ্ঞাসা করা হলে সেও জানে না বলে জানায়।”
ঘটনার বর্ণনায় ওসি বলেন, “তখন ডিউটি অফিসারের কক্ষে সেবা নিতে আসা দুই ব্যক্তিকে দেখিয়ে ওই তরুণ বলেন, ‘তারা খুনের কথা জানেন’। ওই দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারাও বিষয়টি জানেন না বলেন।
“পরে আমি তরুণটির হাত ধরে বলি, এ ধরনের কথা বলছেন কেন? এরপরই তরুণটি এলোপাতাড়ি ঘুসি মারে আমাকে।”
নজরুল বলেন, এ সময় তাকে নিবৃত্ত করতে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করেন ওই তরুণ। তাতে এক কর্মকর্তার আঙুল ভেঙে যায় এবং একজনের মুখ ফুলে ওঠে।
ওই পরিস্থিতিতে তরুণকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয় বলে জানান ওসি।
এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় জানিয়ে পরিদর্শক নজরুল বলেন, “আটকের পর জানান, তারা কয়েকজন গাজীপুর থেকে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে এই থানা এলাকায় ঘুরতে এসেছে। মাইক্রোবাসসহ তিনজন থানার বাইরে আছে।
“পরে পুলিশ থানার বাইরে গিয়ে মাইক্রোবাসে থাকা তিনজনকে থানার ভেতরে আনা হয় এবং মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।”
ওই মাইক্রোবাসে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের লোগো সংবলিত স্টিকার লাগানো রয়েছে বলে জানান তিনি।
ওসি বলেন, “ওই তিনজন পুলিশকে বলেছে, ফাহিম তাদের বন্ধু। তারা ঘুরতে বেরিয়েছে; তবে থানার ভেতরে গিয়ে এরকম আচরণের বিষয়ে তাদের ধারণা ছিল না।”
ফাহিম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল বলেন, “ফাহিমসহ এসব তরুণদের থানায় রেখে তাদের ব্যাপারে এবং তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল- সেসব ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ফাহিমের বাবার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুক্ষণ কথা বলে ফোনটি রেখে দেন।
“আমার ধারণা ফাহিম নামের তরুণটি মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা মাদকসেবী।”