শনিবার ৫ জুলাই ২০২৫ ২১ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ৫ জুলাই ২০২৫
এনসিপির নেতাদের মারধরের শিকার অধ্যক্ষকে ‘নাশকতার অভিযোগে’ চালান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫, ৬:৩৭ PM
এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযানে আটক বগুড়া হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. এস এম মিল্লাত হোসেনকে অবশেষে একটি নাশকতার মামলার তদন্তে পাওয়া আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার (৬ মে) বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান এ তথ্য দিয়েছেন।

এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক ডা. আবদুল্লাহ আল সানীর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সোমবার রাতে শহরের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মার্কেটের চেম্বার থেকে তাকে আটক করে। প্রায় এক কিলোমিটার পথ হাঁটিয়ে লাঠি ও স্যান্ডেল পেটা, চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি দিয়ে ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে সোপর্দ করা হয়। পানি পান করতে চাইলেও দেওয়া হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ডা. এস এম মিল্লাত হোসেন (৫০) বগুড়া শহরের নাটাইপাড়ার খাইরুল ইসলামের ছেলে। তিনি বগুড়া হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। সোমবার রাত ৮টার দিকে তিনি ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মার্কেটে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখছিলেন। এ সময় এনসিপি শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক ডা. আবদুল্লাহ আল সানীর নেতৃত্বে ১৫-২০ নেতাকর্মী তার চেম্বারে যান। তারা তাকে ধরে বাইরে রাস্তায় নিয়ে আসেন। প্রকাশ্যে টেনে-হিঁচড়ে লাঠি ও স্যান্ডেল দিয়ে আঘাত, কিল-ঘুষি মারতে মারতে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বগুড়া ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

পথিমধ্যে মারধরে তিনি কান্নাকাটি ও আঘাত না করতে অনুরোধ জানান। মারধরে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। পরনের শার্ট ছিঁড়ে ফেলা হয়। পানি পান করতে চাইলেও একজন বোতল মুখে ধরার পর পান করতে না দিয়ে মাথায় ঢেলে দেন। এ সময় নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ বিরোধী নানা স্লোগান দেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক ডা. আবদুল্লাহ আল সানীকে বলতে শোনা যায়, ‘অ্যাক (মিল্লাত) ছয় মাস আগে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, আমাকে দুর্বল মনে করেছে। আমি স্পষ্ট কথা বলে দিতে চাই, বেশি কথার মানুষ আমি না, এক কথার মানুষ। একবার বলেছি মানে ওইটা ওয়ার্নিং হয়ে গেছে। সময়মতো ধরে ফেলে দিয়েছি। তুই আমার ভাইগরক ২০-২৫ বছর ধরে মারচু। ভারতপন্থি ও আরএসএস ঘনিষ্ঠ দীলিপ রায়ের (স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি) কোনও সিন্ডিকেট রাখব না, আমরা আসতেছি। হাসনাতের ওপর হামলা হয়েছে।’

ডা. মিল্লাতকে ডিবি অফিসে হস্তান্তরের পর ওসি ডিবি ইকবাল বাহার জানান, এনসিপি নেতাকর্মীরা তাকে আটক করে এখানে দিয়ে গেছেন। পরে তাকে সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

বগুড়া সদর থানার ওসি এম এম মঈনুদ্দিন বলেন, ‘এস এম মিল্লাতের বিরুদ্ধে থানায় কোনও মামলা নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এভাবে কাউকে আটক করে পুলিশে দেওয়ায় আমরা বিব্রত। কিন্তু কোনো উপায় না থাকায় তারা নীরব থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত