দারিদ্র্য বাধা হতে পারেনি স্বপ্নের পথে। জীবনের নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ফুটবল মাঠে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন বুকে লালন করছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রমিলা ফুটবল একাডেমির দুই তরুণী খেলোয়াড়—স্মৃতি আক্তার ও আফরোজা আফরিন লামহা। তবে আর্থিক সঙ্কটে তাদের পথ প্রায় থেমে যাচ্ছিল। ঠিক তখনই মানবিক হাত বাড়িয়ে দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও ক্রীড়ানুরাগী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
জানা গেছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলা প্রশাসকের ক্রীড়া–সংক্রান্ত উদ্যোগ সম্পর্কে জেনে বুধবার তারা দুজন সরাসরি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। প্রশাসনিক ব্যস্ততার মাঝেও ডিসি জাহিদুল ইসলাম ধৈর্য সহকারে শুনলেন তাদের গল্প, জানলেন তাদের স্বপ্ন ও সংগ্রামের কথা।
স্মৃতি আক্তার জানান, তার বাবা বেকার এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। কলেজ শেষে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারছিলেন না ভর্তি ফির অভাবে। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে তার পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
অন্যদিকে, এসএসসি পরীক্ষার্থী আফরোজা আফরিন লামহাও জানায়, তার পরিবারের আয় খুব সীমিত, বাবার একার আয়ে সংসার চালানো কষ্টকর। সেও সহায়তা প্রার্থনা করলে জেলা প্রশাসক তাকে চেক প্রদান করেন।
চেক পাওয়ার পর দুই তরুণীই জানান, ডিসি স্যারের উৎসাহ ও সহযোগিতা তাদের নতুন করে বাঁচার সাহস দিয়েছে। আফরোজা বলেন, “স্যার বলেছেন, যারা সমস্যায় আছে তাদের সরাসরি তার কাছে পাঠাতে। তিনি আমাদের পাশে থাকবেন।”
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “একজন মেয়ে যদি আর্থিক কারণে পড়াশোনা বা খেলাধুলা থেকে পিছিয়ে যায়, সেটি আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। প্রমিলা ফুটবলারদের স্বপ্ন থামতে দেব না—যতটা পারি পাশে থাকব।”
নারায়ণগঞ্জের এই মানবিক ও ক্রীড়ানুরাগী ডিসির উদ্যোগে আলো ফিরে এসেছে দুই তরুণীর জীবনে— আর তাদের চোখে জ্বলছে নতুন স্বপ্নের আলো।