সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫ ২৬ কার্তিক ১৪৩২
সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫
কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জেল হাজতে রহমতুল্লাহ
নেছারাবাদের আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড
নেছারাবাদ ( পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৩ PM আপডেট: ০৬.১১.২০২৫ ১২:৪৭ PM
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আলোচনায় এসেছে ‘আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রহমতুল্লাহ বর্তমানে পিরোজপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন।

নেছারাবাদ উপজেলার ৫ নং জলাবাড়ি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রহমতুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে বৈধ লাইসেন্সের আওতায় সমবায় ব্যবসা পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে তা রূপ নেয় সুদের ব্যবসা ও প্রতারণার জালে। উপজেলা সমবায় কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ‘আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড’ এর সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ৬,৯৯৯ জন এবং বহি সংখ্যা ৭,৪৩০টি।

সমবায় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সদস্যদের শেয়ারে জমা রয়েছে ২০ কোটি ৪৫ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩৩৫ টাকা, এবং সঞ্চয় হিসাবে রয়েছে ৩৫ কোটি ১৬ লক্ষ ৪৪ হাজার ৯৯৩ টাকা। সর্বমোট সদস্যদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৫ কোটি ১৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৩২৮ টাকা।

অভিযোগ উঠেছে, রহমতুল্লাহ সদস্যদের এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে বিভিন্ন এলাকায় শত শত বিঘা জমি ক্রয় করেন। টাকা ফেরতের দাবিতে সদস্যরা বারবার যোগাযোগ করলেও তিনি নানা কৌশলে তাদেরকে বিভ্রান্ত করে সময়ক্ষেপণ করেন। শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ সদস্যরা নেছারাবাদ থানায় তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০/০৪/২৫ মো. মিরাজুল ইসলাম বাঁদী হয়ে থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেন।

এ ঘটনার পর নেছারাবাদ থানা পুলিশ রহমতুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পিরোজপুর আদালতের প্রেরণ করেন। তার অনুপস্থিতিতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যরা নেছারাবাদ সমবায় সমিতির অফিস কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভ চলাকালে উপস্থিত ছিলেন রহমতুল্লাহর স্ত্রী ও বর্তমান সমিতির সভাপতি শাহনাজ পারভীন। তিনি বলেন, আমরা সদস্যদের টাকা ফেরত দিতে চাই। জমিগুলো বিক্রি করে ধীরে ধীরে সকল সদস্যের পাওনা পরিশোধ করা হবে। তবে এজন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন।

তবে তার এই বক্তব্যে ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যদের আস্থা ফেরেনি। তারা দাবি করেন, প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া সদস্যদের কষ্টার্জিত টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়।

এ সময় অফিস সহকারী মো. হুমায়ূন কবির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে নেছারাবাদ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হান মাহমুদের কার্যালয়ে যান এবং ঘটনার বিস্তারিত অবহিত করেন। তিনি বলেন, রহমতুল্লাহর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একাধিক অভিযোগ জমা হয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান আছে এবং বিষয়টি আমরা প্রশাসনের নজরে এনেছি।

ঘটনার সময় উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসান রকি অফিসে উপস্থিত ছিলেন না।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত