সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫ ২৬ কার্তিক ১৪৩২
সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫
কৃষিবিদ্যুৎ অন্তর্ভুক্তির দাবিতে অন্যচিত্র ফাউন্ডেশনের প্রচারাভিযান
ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৩৭ PM
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালায় অ্যাগ্রিভোলটাইকস (Agrivoltaics) বা কৃষিবিদ্যুৎ অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে এক প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

রোববার (৯ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ নগরীতে অন্যচিত্র ফাউন্ডেশন (Onnochitro Foundation), কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (CLEAN) এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (BWGED) এর আয়োজনে এই প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়। 

এ প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের Integrated Energy and Power Master Plan (IEPMP)-এ অ্যাগ্রিভোলটাইকসকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং জাতীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিতে কৃষি ও সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থার সমন্বয় নিশ্চিত করা। অ্যাগ্রিভোলটাইকস ব্যবস্থায় একই জমিতে কৃষি ও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন একসাথে করা সম্ভব। এতে কৃষক একদিকে ফসল উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারেন, অন্যদিকে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রি করে অতিরিক্ত আয় করতে পারেন। ফলে তাদের আয় বাড়ে, জমির উৎপাদনশীলতা বজায় থাকে এবং পরিবেশও রক্ষা পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, IEPMP-এ অ্যাগ্রিভোলটাইকস অন্তর্ভুক্ত করা হলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের অংশীদার হতে পারবেন। 

অন্যচিত্র ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেবেকা সুলতানা বলেন, অ্যাগ্রিভোলটাইকস শুধু কৃষি ও বিদ্যুতের সমন্বয় নয়, এটি বাংলাদেশের সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের পথ খুলে দিচ্ছে। কৃষক যদি একই জমি থেকে খাদ্য ও শক্তি দুটোই উৎপাদন করতে পারেন, তাহলে তা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং জাতীয় পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDGs) অর্জনে সহায়ক হবে।”

ফোরাম অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট-এর সদস্য সচিব মোস্তফা মো. খায়রুল আলম তুহিন বলেন, অ্যাগ্রিভোলটাইকস আমাদের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। এটি শুধু নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নয় বরং খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু সহনশীলতা এবং গ্রামীণ অর্থনীতির পুনর্জাগরণের একটি সমন্বিত পথ। সরকার দ্রুত নীতিগত স্বীকৃতি দিলে কৃষকরা এই পরিবর্তনের অগ্রদূত হয়ে উঠবেন।

ময়মনসিংহ টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি অমিত রায় বলেন, এই উদ্যোগ কেবল প্রযুক্তিগত নয়, এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের বার্তা দেয়। কৃষকদের জীবিকা, জমি ও শক্তি উৎপাদনের মধ্যে যে সেতুবন্ধন তৈরি হচ্ছে, তা টেকসই উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। গণমাধ্যমের দায়িত্ব এই ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।”

উন্নয়নকর্মী ও গবেষক ইমন সরকার বলেন, আমরা চাই কৃষকরা শুধু ফসল উৎপাদক নয় বরং শক্তি উৎপাদক হিসেবেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করুক। চরাঞ্চল ও অনাবাদী জমিতে অ্যাগ্রিভোলটাইকস প্রকল্প চালু হলে তা স্থানীয় কর্মসংস্থান বাড়াবে, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে এবং কার্বন নিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক হবে।”

অ্যাগ্রিভোলটাইকস ব্যবস্থায় সৌর প্যানেলের নিচে জমির আর্দ্রতা কিছুটা বেশি থাকে, যা অনেক ফসলের জন্য উপকারী। এটি মাটির তাপমাত্রা কমায়, পানি ধরে রাখে এবং তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ফসলকে রক্ষা করে। ফলে কৃষি উৎপাদন বাড়ে, পানি সংরক্ষণ হয়, আর পরিবেশে কার্বন নিঃসরণ কমে। এতে সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবক, কৃষক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে। 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত