বাংলাদেশের বৈষম্য দূর করার জন্য পরিকল্পিতভাবে গ্রামকে গড়ে তুলতে হবে। গ্রামকে প্রাধান্য দিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। দেশের বেশিভাগর ভাগ মানুষের আবাসস্থল গ্রামের উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রকে এখনই পরিকল্পনা করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে গ্রাম গড়ে উঠলে প্রান্তিক মানুষের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমবে। এতে শহরের উপর চাপ কমবে। শহরমুখী অভিভাসন কমে আসবে।
পাশাপাাশি টেকসই উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করলে তবেই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) নগর ও অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগ ও ইউআরপি অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে দুইদিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড প্ল্যানিং ডে ২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথিন বক্তব্যে একথা বলেন উপাচার্য। অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়‘ স্মার্ট মাইন্ডস, সাসটেইনেবল ফিউচার।’ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্ল্যানার্স অনুষ্ঠানের ইভেন্ট পার্টনার। সহযোগিতা করছেন শেলটেক, ডিকে কনসালটিং, ট্রয়ি এসোসিয়েট ও পিপি এম।
এদিন সকালে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এরপর কনভেনশন সেন্টারের তৃতীয় তলায় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি মো. আশরাফুজ্জামান প্রামানিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল আরও বলেন, আমাদের দেশে অনেক কিছুরই পরিকল্পনা করা হয় কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত অংশীজনদের সহযোগিতার অভাবে তা বাস্তবায়ন হয় না। উন্নয়নের জন্য প্রথমে প্রয়োজন অংশীজনদের মানসিক পরিবর্তন। ইতিবাচক ভাবে অংশীজনরা এগিয়ে এলে সেই সাথে রাষ্ট্র সঠিকভাবে কাজ করলে পরিকল্পনার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হবে। ভবিষ্যতের সরকার এ বিষয়গুলো দেখবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জীবনে সফল হতে হলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা দরকার এবং সে মোতাবেকে এগিয়ে যাওয়া তথা কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান বলেন, বাংলাদেশে সবকিছু ঢাকা কেন্দ্রিক। কিন্তু ঢাকা শহরের পরিচালনা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকার কারণে অনেক আগেই ঢাকা অচল হয়ে গেছে। অথচ এখনো মানুষ ঢাকামুখী। এই পরিস্থিতির অবসান হওয়ার বিকল্প হলো ঢাকাকে ‘ঢাকা’র বাইরে নিয়ে আসা।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, দেশের সকল শহর পরিকল্পনাহীনভাবে গড়ে উঠেছে। কোন শহরেই এখন শিশুদের খেলার মাঠ নেই। সবুজ নেই, জলাশয় নেই এমনকি চলাচলের পর্যাপ্ত রাস্তা নেই। নগরায়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস করে শহর গড়ে তোলা হয়েছে, হচ্ছে এমনকি এখন গ্রামকেও ধ্বংস করা হচ্ছে। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে ঢাকা ,গাজীপুর, সাভারের মতো পুরো বাংলাদেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে।
আরও বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউট অফ প্ল্যানার্স এর সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান, পাস্ট প্ল্যানার্স অ্যালামনাইয়ের সভাপতি আতিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন হোসনেয়ারা। বিকালে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রথম দিনের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন।