শনিবার ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
শনিবার ১৫ নভেম্বর ২০২৫
দিনাজপুর-৫ আসনে বিএনপিতে আলোচনায় যারা
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৫০ PM

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি ইতোমধ্যে ২৩৭ টি আসনের মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষনা করলেও, ঘোষনা হয়নি দিনাজপুরের অতি গুরুত্বপুর্ন আসন দিনাজপুর-৫ (ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) আসনের প্রার্থী ঘোষনা। 

এতে করে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ জেড এম রেজওয়ানুল হক ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সভাপতি তারেক রহমানের আইন উপদেষ্ঠা ব্যারিষ্টার একেএম কামরুজ্জামানের পাশাপাশি নতুন করে আলোচনায় এসেছে, জেলা বিএনপির উপদেষ্ঠা ফুলবাড়ী উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতির নাম। 

অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করে একাধারে ছাত্রদলের সভাপতি, যুবদলের সভাপতি, উপজেলা বিএনপির দুইবার সাধারন সম্পাদক, তিনবার সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে উপজেল বিএনপিকে সুসংগঠিত করেছেন, এছাড়া ১০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এর আপন ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুলকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

কিন্তু গত পৌরসভা নির্বাচনে খুরশিদ আলম মতির আপন ছোট ভাই মাহমুদ আলম লিটন পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় তাকে দলিও পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। এরপর তাকে দলিয় সদস্যপদ ফিরিয়ে দিয়ে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা পদে নির্বাচিত করলেও, উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ এখনো ফিরে দেয়া হয়নি।

জানা গেছে, এ আসনের ১৯৯৬ সাল থেকে গত চারটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদন্দিতা করেছেন পার্বতীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এজেডএম রেজওয়ানুল হক। কিন্তু এবার গত বছর থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশায় গণসংযোগে নেমেছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসভাপতি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আইন উপদেষ্ঠা ব্যারিস্টার একেএম কামরুজ্জামান জামান, এ দুই নেতার রশি টানা-টানিতে ঝুলে গেছে মনোনয়ন ঘোষনা।

এ আসনের মধ্যে রয়েছে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি, মধ্যপাড়া কঠিনশীলা খনি, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পার্বতীপুর রেওয়ে জংশন তেলডিপোসহ একাধিক সরকারের গুরুত্বপুর্ন প্রতিষ্ঠান। এ আসন থেকে দিনাজপুর জেলার রাজনৈতিক অঙ্গন নিয়ন্ত্র হয়ে আসচ্ছে। ফলে এ আসনটি জেলা ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত।

এদিকে গত চারটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচনে প্রতিদন্দিতাকারী এ জেড এম রেজওয়ানুল হক একমাত্র ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচন ছাড়া কোন বারেই তিনি নির্বাচিত হতে পারেননি, বয়সের ভারে এবার তার শারিরিক অবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়েছে, তার পক্ষে নির্বাচনে ব্যাপক গণসংযোগ করা কঠিন, অপরদিকে যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসভাপতি ব্যারিস্টার একেএম কামরুজ্জামান নতুন মুখ, এ কারনে বিকল্প প্রাথীর নাম এখন জোরে শোরে উচ্চারিত হচ্ছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী বলেন অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি এ আসনের একজন জনপ্রিয় ব্যাক্তি, ক্লিনইমেজের নেতা হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। গত ২০১৪ সালে তৎকালির আওয়ামীলীগ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের আপন ছোট ভাই ও উপজেলা ওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুলকে ১৭ হাজার ভোটের ব্যাবাধানে পরাজিত করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিল। 

তিনি বলেন, খুরশিদ আলম মতি ১৯৭৯ সালে ছাত্ররানীতির মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। এরপর ছাত্রদলের সভাপতি, যুবদলের সভাপতি, উপজেলা বিএনপির দুই বার সাধারন সম্পাদক, তিনবার সভাপতিসহ দিনাজপুর জেলা বিএনপির সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ২০১২ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল প্রযন্ত ফেসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে সম্মুখ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি এই ত্যাগী নেতাকে স্বপদে বহালসহ দলিয় মূল্যায়ন প্রত্যাশা করেন তিনি।

ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি সহকারী অধ্যাপক কায়ছার পারভেজ নান্নু বলেন ১৯৮৯ সালে তৎকালিন বিএনপি নেতা হাজি মন্সুর বিএনপিকে ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় পাটিতে যোগদান করার কারনে, এ এলাকায় বিএনপিতে নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে। এরপর অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি ১৯৯২ সালে ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে বিএনপিকে সুসংগঠিত করেছে। তিনি বলেন সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এ নির্বাচনে দল যাকেই নমিনেশন দেক না কেন, নির্বাচনের মাঠে অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতির প্রয়োজন সব থেকে বেশি।

উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি সাবেক ভিপি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নজমুল হক নাজিম বলেন অধ্যক্ষ খুশিদ আলম মতি পারিবারিক ভাবে জনপ্রিয়, খুরশিদ আলম মতির বাবা নুরুল হুদা ছিলেন ফুলবাড়ী পৌরসভার একজন জনপ্রিয় চেয়ারম্যান, তার দাদাও ছিলেন তৎকালিন সুজাপুর ইউনিয়ন (বর্তমানে পৌরসভা) এর চেয়ারম্যান, তার ছোট ভাই পৌরসভার মেয়র। রাজনীতিতে এ রকম জনপ্রিয় নেতাকে খুব প্রয়োজন।

এদিকে দলের তৃণমুলের নেতা-কর্মিরা বলছেন দল যাকেই নমিনেশন দিবে তার হয়ে কাজ করবে, তবে সব শ্রেনী পেশার মানুষের সমর্থ পেতে অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতির মতো জনপ্রিয় নেতার প্রয়োজন রয়েছে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন আগামীতে কে হচ্ছে ধানের শীষের কান্ডারী, সেই সীদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে দলের আগামীদের ভবিষৎ।







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত