আগামীকাল মঙ্গলবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ৩৪ বছর পূর্ণ করে ৩৫ বছরে পদার্পন করছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আপামর মানুষের নিরলস প্রচেষ্টা ও ত্যাগ।
দীর্ঘ ৩৪ বছরে শান্তিপূর্ণ একাডেমিক পরিবেশ, মানসম্মত শিক্ষা, গবেষণার গভীরতা, আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং মানবিক মূল্যবোধের সমন্বয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ এবং প্রেরণার প্রতীক। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এখন শুধু দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় বরং বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার অগ্রযাত্রার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান পরবর্তী সংকটময় মুহূর্তে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম-এর নেতৃত্বাধীন বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণ করে। দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখা, গবেষণায় গতিশীলতা আনা এবং প্রশাসনিক কাঠামো আধুনিকায়নকে সামনে রেখে একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
বিশেষ করে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ডিসিপ্লিনে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির লক্ষ্যে অ্যাক্রেডিটেশনের আবেদন (ইন্টেন্ট টু অ্যাপ্লাই), স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথমবারের মতো গবেষণা অনুদান চালু, আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা প্রকাশে আর্থিক প্রণোদনা, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবরেশনে গুরুত্ব দিয়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে প্রথম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কোলাবরেটিভ রিসার্চ গ্রান্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে গবেষণায় অনুদান প্রদান করেছে।
উপাচার্যের শুভেচ্ছা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও খুলনার সর্বস্তরের মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম। এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এতদিনের অর্জন আমাদের সবার গৌরব। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও খুলনার মানুষের আন্তরিক সমর্থন, অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও সহযোগিতাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের মূল শক্তি। তাঁদের প্রতি জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্ভাবন, মানবিকতা, সৃজনশীলতা ও দায়িত্ববোধে পরিপূর্ণ এক জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রে পরিণত করতে চাই। পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে তরুণদের সৃষ্টিশীল মনন ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিই গড়ে তুলবে আগামী দিনের বাংলাদেশ, আর সেই যাত্রায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে পথপ্রদর্শকের ভূমিকায়।
কর্মসূচি গ্রহণ: আগামীকাল ২৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস যথাযথভাবে পালনের জন্য এ বছর বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল ১০টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বেলা ১১টায় সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে দিবসের মূল অনুষ্ঠান এবং গত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনসমূহকে সম্মাননা প্রদান, পরে অদম্য বাংলা প্লাজায় বিভাগ/ডিসিপ্লিনসমূহের গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপনার ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে স্থাপন, বাদ যোহর দোয়া, মন্দিরে প্রার্থনা আয়োজন এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক, রাস্তা, বিভিন্ন ভবন, হলসমূহ ও অন্যান্য স্থাপনা দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।