কক্সবাজার টেকনাফে ভোটার হলনাগাদ শুরু হয়েছে ১লা আগস্ট থেকে। এই কর্যক্রম চলমান থাকবে আগামি ২২ আগস্ট পর্যন্ত। সাধারণ মানুষ ভোটার হতে ছুটছেন উই পোকার মত। ভোটার প্রত্যাশীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিভিন্ন স্কুলের সহকারি শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের।
এদিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউপির ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পান লাতুরীখোলা ’তালেব বাহার’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইয়াছিন আরফাত। অভিযোগ রয়েছে ,তথ্য সংগ্রহ করার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ঘুষ লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছেন মাস্টার ইয়াছিন। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের পর গতকাল মঙ্গলবার তাকে দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ভোটার প্রত্যাশীরদের কাছ থেকে তিনি প্রতি ভোটার ফরমের বিনিময়ে ১ হাজার থেকে শুরু করে ২-৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। অনেকে ঘুষ দিতে না পারায় ভোটার ফরম না নিয়েই চলে গেছেন। ভোটার প্রত্যাশীরা ওনার এমন অনৈতিক আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে ঘুষকান্ডের কার্যক্রমগুলো গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে নেয়।
এরপরে বিষয়টি প্রতিবেদকের নিকট হস্তান্তর করে ভোটার প্রত্যাশী কয়েকজন ছেলে। ভিডিওতে দেখা যায়,টাকা গুনে গুনে ওই মাস্টার ভোটার প্রত্যাশীদের বলছে,যাদের (টাকা) আছে তারা দুই ফাইলে এত টাকা দিয়েছে ,৫ হাজার। তোমরা নাকি আরো বেশি দিবা? তখন ভোটার প্রত্যাশী একজন বলল, ওস্যার আমরা স্টুডেন্ট মানুষ এত টাকা চাইতে পারবেন নাকি? এইভাবে ঘুষ নেয়ার কথা টেকনাফ উপজেলা নির্বাচন কমিশন থেকে মাস্টার ইয়াছিন আরফাতকে দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বেদারুল ইসলাম জানান,ভিডিও সহ অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। উক্ত এলাকায় নতুন একজন তথ্য সংগ্রকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করার কথা শুনে ভোটার প্রত্যাশী ১৫-২০ জন ছেলে ও তাদের অবিভাবকরা জানায়, আমাদের কাছ থেকে মাস্টার ইয়াছিন অন্তত ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই টাকা আমরা ফেরত চাই। দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করে আমাদের টাকাগুলো তাকে চুপে চুপে খাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার মত হয়েছে। দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার কোনো শাস্তি হতে পারে না! এই ঘুষখোর মাস্টার কে স্কুল থেকেও বহিষ্কার করে উচিত শাস্তি দেয়া দরকার বলে দাবি করে তাঁরা (ভোটার প্রত্যাশীরা) বলেন, কয়েকদিনের দায়িত্ব পেয়ে একজন শিক্ষক যখন দ্রুত অবৈধ লেনদেনে জড়িয়ে পড়ে ,এমন নীতিনৈতিকতাহীন ঘুষখোর শিক্ষকের কাছ থেকে ছাত্রছাত্রীরা কোনোধরণের নৈকিত শিক্ষা পাবে বলে আশা করা যায় না! তাই তাকে শিক্ষাঙ্গন থেকেও সরিয়ে উচিত শিক্ষা দেয়া আবশ্যক! অন্যথায় ভবিষ্যতে কোনো দায়িত্ব পেলে আরো বেপরোয়া হবে বলেও। জানান তাঁরা।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এমদাদুল হকের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ের সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি কেউ কোনো অপরাধ করে থাকে,তাহলে অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে বলেও জানান তিনি।
অভিযুক্ত মাস্টার ইয়াছিন আরফাতের মুঠোফোনে জানতে চাইলে, টাকার নেয়ার কথা শুনে ফোনের লাইন কেটে দে।
-বাবু/শোভা