সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পারকোলা গ্রামের এক শতক জমির ওপর দোচালা একটি টিনের ঘরে বেড়ে উঠেছেন সাফজয়ী জাতীয় নারী ফুটবল দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় আঁখি খাতুন। সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে গোল্ডেন বুট জেতা এ ফুটবলারকে তিন শতক জমি উপহার দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে সে সময়ের দেওয়া জমি পাননি এই নারী ফুটবলারের পরিবার।
পুনরায় চলতি বছরের গত ৪ জুন সিরাজগঞ্জ অফিসার্স ক্লাবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আঁখির পরিবারের কাছে ৮ শতক জমির দলিল হস্তান্তর করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। এই জমি নিয়ে আর সমস্যা হবে না, এমনটাই জানানো হয়েছিল আঁখির পরিবারকে। কিন্তু সম্প্রতি সেই জমি নিয়েও চলছে আইনি জটিলতা।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আঁখির বাবা আক্তার হোসেন জানান, বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শাহজাদপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনসহ কয়েকজন পুলিশ তার বাড়িতে আসেন। তারা বলেন, সরকারের দেওয়া আঁখির জমির ওপরে আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে এএসআই মামুন তাকে একটি কাগজে সই দিতে বলেন।
আক্তার হোসেন তাকে ইউএনও বা ডিসির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তখন আবারও সই চাইলে তিনি সই না দেওয়ায় তাকে কটূক্তি করেন পুলিশ কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, তাকে থানায় ধরে নিয়ে যাবে বলা হয়েছে।
আক্ষেপ করে আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জমিতে এত ঝামেলা কেন হচ্ছে?’
আঁখির বড় ভাই নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘থানা থেকে পুলিশ এসে বাবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে এবং আমাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে।
পুলিশ বলেছে সই করতে হবে, আমার বাবা সই করেননি। তাই বাবাকে থানায় নিয়ে যাবে বলেছে। আঁখিকেও থানায় যাওয়ার কথা বলেছে।’
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার এএসআই মামুন হোসেন বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের ১৪৪ ধারা জারির নোটিশ নিয়ে আঁখির বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেই নোটিশ বিষয়ে আঁখির বাবাকে বোঝানোর পর একটি সই করতে বলা হয়। পরে সই না করায় কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে ওসি স্যার সেখানে নিয়ে গিয়ে সেটা সমাধান করেছে।’
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর এএসআই মামুনকে দিয়ে আঁখির বাবার কাছে ‘সরি’বলানো হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম জানান, আঁখিকে উপহার দেওয়া জমিতে পৌর এলাকার মোকাররম হোসেন নামের এক ব্যক্তি আদালতে মামলা করেছেন। তবে ওটা খাস খতিয়ানের জমি। কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন নয়।
-বাবু/এসআর