ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় রাতে হাসপাতালে জরুরী বিভাগে চিকিৎসক পাওয়া গেলেও কোনো ঔষধের দোকান খোলা পাওয়া যাচ্ছে না। রাত সাড়ে ১১টা বাজলেই সকল ফার্মেসী বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনেও কোনো ফার্মেসী খোলা থাকে না।
দীর্ঘদিন ধরে সরাইলের সচেতন মানুষ এই দাবি নিয়ে সোচ্চার থাকলেও প্রশাসনের শক্ত কোনো পদক্ষেপ না থাকায় আজ পর্যন্ত সারারাত একটা ঔষধের দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, দুর্বশত কারণে রাত ১ টার পরে যদি জরুরী চিকিৎসায় সরাইল হাসপাতালে আসে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাহির থেকে দ্রুত ঔষধ কিনে আনতে হয়। তখন সব দোকান থাকে বন্ধ। হাসপাতাল মোড়ে ডে- নাইট লেখা ফার্মেসী থাকলেও রাত বারটার পরে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। অন্ত:ত একটি ফার্মেসী যদি গভীর রাতেও খোলা থাকত তখন জরুরী ঔষধের অভাবে পেরেশানি থাকত না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই হাসপাতালকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল মোড়ে রয়েছে ডে-নাইট নামে ফার্মেসীসহ বেশ কয়েকটি ফার্মেসী। রোগীদের চাহিদামত এই ফার্মেসীগুলোতে সব ধরনের ঔষধের সরবরাহ আছে।
এদিকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আব্দুল করিম বলেন, আমার চাচাত ভাইয়ের ঘাড়ে ব্যথা অর্থাৎ হাই প্রেশার দেখা দিলে রাত ৩ টায় তাকে নিয়ে সরাইল হাসপাতালে জরুরী বিভাগে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে কয়েকটি ঔষধ কিনতে হাসপাতাল মোড়, সরাইল বাজারসহ সম্ভাব্য সকল জায়গায় হন্যে হয়ে ঘুরেও কোনো ঔষধের দোকান খোলা না পেয়ে সৈয়দটুলা আরব আলী বাজারের এক ফার্মেসীর মালিককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে ফার্মেসী খুলে প্রয়োজনীয় ঔষধ নিয়ে ফের হাসপাতালে যায়। ততক্ষনে রোগী অচেতন হয়ে যায়। পবর্তীতে চিকিৎকের পরামর্শে রোগীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিলেও রোগীকে আর বাঁচানো গেল না। তখন মনে হয়েছিল যদি হাসপাতাল মোড়ে কোনো একটি ঔষধের দোকান খোলা থাকত আর তাৎক্ষনিক ঔষধ নিয়ে দ্রুত রোগীকে পুশ করা যেত হয়ত রোগী বেঁচে যেত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফার্মেসীর মালিক জানান, হাসপাতালের আশপাশের ফার্মেসীগুলোর প্রতিটি গভীর রাতের অসহায় রোগীদের প্রয়োজনীয় ঔষধের কথা বিবেচনায় অন্ত:ত এক রাত করে পর্যায়ক্রমে সারা রাত যেন খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয় এ ব্যপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফার্মেসী ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকমাস আগে দেওয়া হলেও প্রকৃত অর্থে তা বাস্তবায়ন হয়নি। আর সারা রাত ঔষধের দোকান খোলা রেখে তেমন কোনো বেচাকেনা হয় না।
রাতে ঔষধের দোকান বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সরাইল উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, রাতে দোকান যদি কেউ সরাসরি না খোলা রাখে। হাসপাতাল মোড়ে যারা আছে তারা অনেকেই রাতে দোকানের ভিতরে থাকে। পরিচিত কোনো লোক যদি ডাকে তখন তারা দোকান খুলে ঔষধ বিক্রয় করে।
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নোমান মিয়া বলেন, তাদেরকে আমি ডেকে বলেছি রাতে অন্তত দুই একটা ঔষধের দোকান খোলা রাখে। এরা দুই একজন বলেছেন আমরা মাঝে মধ্যে থাকি রাতে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তেমন কোনো বিক্রি হয় না সেই কারণে পোষে না, আমি আবারও তাদের সাথে বসব।