১৮ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) ভোর পাঁচটা। ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বজনকে দেখতে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর উপজেরার জৈনা বাজার এসে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন কৃষক আলম মিয়া।
কিছুক্ষণ পর ময়মনসিংহ থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস আসলে কয়েকজন যাত্রীকে বাসে দেখে তিনিও ওই বাসে ওঠে বসেন। বাসটি জৈনা বাজার ছেড়ে কিছু দূর যাওয়ার পর বাসে থাকা কয়েকজন যাত্রী বেশি ছিনতাইকারী তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে তার কাছে থাকা নগদ টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় বাস থাকা ছিনতাইকারীরা।
ঘটনার শিকার আলম মিয়া শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের মৃত আলফাজ উদ্দিনের ছেলে। ওই দিন ভোর সাড়ে ৪টা থেকে পৌনে ৫টার মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মধ্য রাতে বা ভোরের আলো ফোটার আগে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পথচারী ও বাসযাত্রীদের আতঙ্ক হলো ওইসব যাত্রীবেশি ছিনতাইকারী। প্রায়ই ভোররাতে খালি বাস নিয়ে ছিনতাই করেন তারা। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কোনো স্থান থেকে যাত্রীকে বাসে তুলে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকাসহ মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার।
১৬ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) ভোর সাড়ে ৫ টা। মুদি ও মুনিহারী ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া (৫৫) দোকানের মালামাল কেনার জন্য জৈনা বাজার থেকে গাজীপুর যাওয়ার জন্য উদ্দেশ্য ময়মনসিংহ থেকে আসা একটি অজ্ঞাত যাত্রীবাহী বাসে উঠেন। ওই বাসে ৪/৫ জন যাত্রী ছিল। বাসটি মাওনা চৌরস্তা উড়াল সেতুর ওপর উঠার সাথে সাথে বাসে থাকা ওই ৪/৫ জন যাত্রী বাসের দরজা বন্ধ করে তার মুখ বেঁধে গলায় গামছা পেঁচিয়ে সিটের সাথে বেঁধে ফেলে।
এসময় তাকে এলাপাথারি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। হামলাকারীরা তার জ্যাকেটের বুক পকেটে থাকা মালামাল কেনার নগদ ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর পৌরসভার ২নং সিএন্ডবি বাজারের ১০০ গজ সামনে নিয়ে বাস থেকে ফেলে দিয়ে বাসটি দ্রুতগতিতে চলে যায়। ফেলে দেয়ার আগে এ ঘটনা কারো সাথে শেয়ার করলে তাকে খুন করে ফেলবে বলেও হুমকি দেয় ওই ছিনতাইকারীরা।
ভুক্তভোগী সিরাজ মিয়া গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের জন্দর আলীর ছেলে। সে জৈনা বাজার আমিন সুপার মার্কেটের মুদি ও মনোহারি ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে ওইদিন রাতে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেিয়ছেন। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ৪/৫ জন একসঙ্গে গাড়িতে থেকে বাসে একা যাত্রী পেলে এভাবে ছিনতাই করে তারা।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সূজন কুমার পন্ডিত জানান, এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলেও আমাকে ঘটনাটি তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছে কিনা এ মুহুর্তে আমার খেয়াল হচ্ছে না। তবে, তিনি বলেন আমার এক আত্নীয় এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো: মাহবুব মোর্শেদ বলেন, এ বিষয়গুলো লোকাল (শ্রীপুর) থানা পুলিশ দেখবে। আমরা হাইওয়ে থানা পুলিশ এগুলো দেখি না। তিনি ভুক্তভোগীকে শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য এ প্রতিনিধিকে পরামর্শ দেন।