পটুয়াখালীতে এ্যাম্বুলেন্স চালকের অবহেলা ও খামখেয়ালিপনায় মোসাম্মদ বেবি বেগম (৫৫) নামের এক মুমূর্ষু রোগীর এ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২৪ মার্চ) রাতে পটুয়াখালী- কুয়াকাটা মহাসড়কের হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বেবি বেগম আমতলী উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলামের স্ত্রী। বিষয়টি শহিদুল ইসলাম নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ঘটনার সময় ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক এ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখেছে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জাকির এর উপর হামলা চালায় এবং প্রায় এক ঘন্টাব্যাপী পটুয়াখালী- কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ শাখার ইনচার্জ একেএম আজমল হুদার নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
নিহত বেবি বেগমের ভাই মনিরুল ইসলাম জানান, রবিবার বিকালে বেবি অসুস্থ হলে আমরা এ্যাম্বলেন্স ড্রাইভারকে ফোন দেই কিন্তুু ড্রাইভার প্রায় ২ ঘন্টা পর আসে। পরে এ্যাম্বুলেন্স আসলে ড্রাইভারকে জিজ্ঞেসা করা হয় এতো দেরি কেন? পরে কলাগাছিয়া থেকে রোগী নিয়ে আসার পথে হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় এ্যাম্বুলেন্স দাড় কড়ায় ড্রাইভার। সেখানে ট্রাফিক সার্জেনকে নাকি তিনি খুজতে থাকেন। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ড্রাইভার এ্যাম্বুলেন্সের কাছে না আসায় আমরা ড্রাইভারকে ফোন দেই তাড়াতাড়ি আসার জন্য। এরমধ্যে এ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই আমাদের রোগী মারা যায় জানান রোগীর ভাই মনিরুল ইসলাম।
অপরদিকে রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার বিজন হাওলাদার জানান, সাইরেন বাজিয়ে পটুয়াখালী থেকে আমতলীর কলাগাছিয়ায় মুমূর্ষু রোগী বেবি বেগম কে আনতে যাচ্ছিলেন। এসময় হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সার্জেন মাখন লাল তার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। পরে ড্রাইভিং লাইসেন্স রেখে দেন মাখন লাল এবং রোগী নিয়ে যাওয়ার পথে তার সাথে দেখা করে যেতে বলেন।
তার কিছুক্ষণ পর ড্রাইভার বিজন হাওলাদার রোগী নিয়ে হেতালিয়া বাঁধঘাট ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে এসে এ্যাম্বুলেন্স দাড় করান। এসময় ট্রাফিক সার্জেন্ট মাখন লালকে প্রায় আধাঘন্টা যাবত খুজতে থাকেন ড্রাইভার বিজন। এর মধ্যেই রোগী বেবি বেগম এ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রাফিক পুলিশ রোগীবাহি এ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখেছে এমন গুজবে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে খানিক দূরে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চালায়। এসময় মাসুম নামের এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আহত হয়।
এদিকে মৃত্যু বেবি বেগম এর পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় রাত এগারোটার দিকে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন পুলিশ।