শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫ ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
সাগরে এক জালেই ১৩০ মণ ইলিশ
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৪:৩১ PM আপডেট: ০৬.০৪.২০২৪ ৪:৪৬ PM
কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ১৩০ মন ইলিশ। সূর্য মাঝি নামের ওই জেলে শনিবার সকালে এসব মাছ বিক্রির জন্য আলীপুর মৎস্য অবতরন কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার পূর্ব দক্ষিনে সাগরের একটি পয়েন্টে এসব মাছ ধরা পড়ে বলে সূর্য মাঝি জানান।
 
সূর্য মাঝি জানান, গত বুধবার ১৭জন জেলেসহ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর আল্লাহর দয়া-১ নামের একটি ট্রলার নিয়ে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে আলীপুর থেকে বঙ্গোপসাগরে যাত্রা করেন তিনি। পরে একবার জাল টান দেয়ার পরই প্রচুর পরিমানে ইলিশ ধরা পড়ায় পুরো মাছ ট্রলারে তুলতে না পারে অর্ধেক জাল সাগরে ফেলেই চলে আসেন তারা। এসব ইলিশের বাজার মূল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা বলে জানান তিনি। 

হঠাৎ করে সাগরে কেন এত ইলিশ ধরা পরলো জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, এটি ভাল খবর। সকালেই আমি খোজ নিয়ে যতটুকু জানতে পেয়েছি তাতে ধারনা করা হচ্ছে যে, গভীর সাগরের কয়েকটি পয়েন্টে ইলিশের অবাধ বিচরণ শুরু হয়েছে।

কারণ মাঝখানে বেশ কিছুদিন গভীর বা মাঝ সাগরে ইলিশ ধরা না পড়ায় কুয়াকাট সংলগ্ন উপকুলের জেলেরা সাধারনত সাগরকূলবর্তি এলাকাতেই বেশি জাল ফেলেছে। গভীর সাগরে মাছ শিকার থেকে বিরত ছিল। যেকারণে মাঝ সাগর ছিল ফাকা। আবার গত দুই মাস ধরে সাগরে অস্বাভাবিক পরিমান জেরিফিশ ধরা পড়াতেও জেলেরা গভীর সাগরে না গিয়ে উপকুলবর্তি এলাকায় মাছ শিকারে ব্যস্ত ছিল। ঠিক এই সময়ে ইলিশ অবাধ বিচরণ শুরু করায় এখন গভীর সাগরে বিশেষ করে ২০ থেকে ৩০ ফিট লম্বা জাল ফেলতে পারলেই ইলিশের দেখা মিলছে। শনিবার সকালে কুয়াকাটার মহিপুরে সূর্য মাঝির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। তার জালও ছিল ভাসান জাল। তাছাড়া সাগরে পানির অবস্থানও বদল হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে প্রচুর ঢেউ দেখা গেছে। ইলিশ পরার এটিও একটি কারণ বলে মনে করেন এই মৎস্য গবেষক।

কামরুল ইসলাম জানান, একটি জালে ১৩০মন ইলিশ পাওয়া খুবই ভাগ্যের ব্যপার। মাছ গুলোর সাইজ প্রায় কাছাকাছি অর্থাৎ ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম। আবার শুধু মাত্র ইলিশ মাছই ধরা পরেছে ওই জালে। ধারনা করা হচ্ছে মাইগ্রেশনের জন্য এসব মাছ সাগরের অতিগভীর থেকে উপকুলের দিকে অর্থাৎ মিঠপানির দিকে চলাচল শুরু করছে। 

তিনি জানান, সাগরে ৬৫ দিন সকল প্রকার মাছ শিকার বন্ধ থাকার ফলেই এখন কিন্তু সব ধরনের মাছ জেলেদের জালে পাওয়া যাচ্ছে। মাঝখানে কয়েকদিন ইলিশ কম ধরা পরলেও এখন কিন্তু কমবেশি ভাল ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পরছে।

কামরুল ইসলাম জানান, গভীর সাগরে প্রচুর মাছ আছে তবে সেসব স্থান চিহ্নিত করে জাল ফেললে তবেই বেশি ইলিশ ধরা পরে। সূর্য মাঝির ক্ষেত্রেও অনুরুপ ঘটনা ঘটেছে। যেহেতু চিটাগাং এর ট্রলার তাদের জালও বেশ লম্বা এবং পরিচিত স্থান বাদ দিয়ে একটু গভীরে গিয়ে জাল ফেলার কারণেই তার জালে এত পরিমান ইলিশ পরেছে। তার ধারণা, এখন যেসকল জেলেরাই গভীর সাগরে জাল ফেলবে তাদের জালেই প্রচুর ইলিশ ধরা পরা অস্বাভাবিক বিষয় না।

কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, আশা করছি বৃষ্টি শুরু হলে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়বে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত