নীলফামারী কুন্দপুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারী নীতিমালা কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কোন প্রকার নিয়োগ ছাড়াই ৮ বছর ধরে জালিয়াতির মাধ্যমে বেতন তুলছেন (এমপিও) ভুক্ত সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায়, তার বিরুদ্ধে রয়েছে স্বাধীনতা দিবস অবমাননা ও পালনে কটুক্তি করার অভিযোগ।
২০১৬ সালের ১৪ জুলাই কুন্দপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় এর সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায় (বিজ্ঞান) পদে চাকরি ছেড়ে নীলফামারী সদর উপজেলার আরাজি রাম কলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪/০৭/২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
বিকাশ চন্দ্র রায়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের কারণে কুন্দপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ শাজাহান আলী চৌধুরী সভাপতিত্বে ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই জরুরী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সভায় ৪ নং আলোচ্য বিষয়ে উঠে আসে সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) বিকাশ চন্দ্র রায় ১৪/০৭/২০১৬ ইং তারিখে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করায় নতুন শিক্ষক না আসা পর্যন্ত মাসিক ২০০০ টাকা বেতনে শংকর কুমার রায় কে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৫ দিনের মাথায় (৭ই আগস্ট ২০১৬) ম্যানেজিং কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সভায় ৩নং আলোচ্য বিষয়ে মোঃ আশরাফুল ইসলাম প্রস্তাব করেন যে সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) পদে বিকাশ চন্দ্র রায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করায় তাহার পদ শুন্য ঘোষণা করা হয়।
উক্ত প্রস্তাবটি শিক্ষক প্রতিনিধি স্বপ্না রানীর সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয় যে এই পথটি শূন্য করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয় প্রধান শিক্ষক খোকারাম রায় কে।
কয়েক মাস পর কোন প্রকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সরকারি বিধি কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিকাশ চন্দ্র রায় কে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আবার গোপনে বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। দীর্ঘ আট বছর ধরে বৈধ নিয়োগ ছাড়াই নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরী করছেন বিকাশ চন্দ্র রায়।
কুন্দপুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায়ের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেননি।
সাবেক প্রধান শিক্ষক খোকারাম রায় এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান এরকম ঘটনা তার জানা নেই তবে সে অসুস্থতার কারণে মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে ছুটিতে ছিলেন।
সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ শাজাহান আলী চৌধুরী ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কুন্দপুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্র নাথ রায় জানান, এই বিদ্যালয়ে আমার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হওয়ার আড়াই বছরের মতো হলো আমি এসব কিছু জানি না। এ সংক্রান্ত কোনো নথিও আমার কাছে নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আইবুল ইসলাম জানান, বিষয় টি জানার পরে প্রধান শিক্ষকে দ্বিজেন্দ্র নাথ রায় এর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মেহেদী হাসান জানান, তদন্ত কমিটি করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন অনিয়মের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে একাধিক শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন যে বিকাশ চন্দ্র রায় ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের বিদ্যালয়ের পাশে থেকেও উপস্থিত হননি তার উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য তাকে ডাকা হলে। তিনি স্বাধীনতা দিবস ও শিক্ষকদের সম্পর্কে কটুক্তি করেন। এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য সিদ্ধান্ত নিলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।