শনিবার ২১ জুন ২০২৫ ৭ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ২১ জুন ২০২৫
এক মাঠ সংস্কার করতেই ২৮ মাস, অব্যবস্থাপনায় বেহাল দশা মাঠের
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪, ৫:২০ PM
সংশ্লিষ্ট বিভাগের যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও অবহেলায় খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটি। 

একসময় সকাল-বিকেল ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার অনুশীলন ছাড়াও বড় পরিসরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে বড় বড় প্রোগাম অনুষ্ঠিত হতো এই মাঠে। তবে দীর্ঘ দিনের অযত্ন, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় খেলাধুলার জন্য অনুপযোগী হয়ে উঠেছে মাঠটি।

চার বছর থেকে সংস্কারের নামে বেহাল দশায় ফেলে রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠটি।  মাঠসহ পুরো ক্যাস্পাসে ১কোটি ৮০ লক্ষ টাকার মাটি ভরাট করেও মাঠের হয়নি কোনো উন্নতি ।সামান্য বৃষ্টি হলেই জলে ভাসে খেলার মাঠ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠের বিভিন্ন স্খানে পানি জমে থাকতে দেখা যায়।পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়।   আবার পানি শুকালে মনে হবে কোনো ফসলের ক্ষেত। মাঠে খেলার সময় বাতাসে উড়ছে ধুলাবালি। 

মাঠের মধ্যে নেই খেলোয়াড়দের বিশ্রামের জায়গা, নেই নিরাপদ খাবার পানির সু-ব্যবস্থা, খেলার মাঠ সার্বক্ষণিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নেই  কোনো মাঠকর্মীও। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে ইট-পাথরের কণা, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন অব্যবস্থাপনায় ফেলে রাখায় খেলাধুলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এ মাঠটি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী খেলতে গিয়ে আহত হয়েছেন এ মাঠে।

এ ব্যাপারে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের  শিক্ষার্থী ফাহিম মুনতাসির হিমেল বলেন, বেহাল অবস্থা শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের। অল্প কিংবা মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেই মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মূলত পানি নিষ্কাশনের যথেষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় এই অবস্থা হয়েছে। এছাড়াও মাঠ উঁচু নিচু হওয়ার ফলে তা খেলার জন্য প্রায় অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।

ফোকলোর বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের আরেক শিক্ষার্থী  মাহমুদুল হাসান রবিন জানান,২০১৯ সালে ক্যাম্পাসে আসি তখন যথেষ্ট সুন্দর, পরিচ্ছন্ন মাঠ পেয়েছি। করোনা পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাস চালু হলে কিছুদিন পর শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিছু বালু ও অল্প  নিন্মমানের লাল মাটি ব্যবহার হয়েছে যার দ্বারা পূর্বের মাঠকে নষ্ট করা হয়েছে। দেখলে মনে হয় সাম্প্রতিক সময়ে ধান চাষ হয়েছে। এই মাঠে খেলাধুলা করে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের ইনজুরিতে পড়তে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি হল চালু থাকলেও একটি মাত্র খেলার মাঠ সেটির অবস্থা এমন থাকবে এটা কাম্য নয়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের  পরিকল্পনা,উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো.হাফিজুর রহমান বলেন, পানি যাওয়ার জন্য কিছু মাটি কেটে দেয়া হয়েছে।আমরা মাঠের চারদিকে ড্রেন করে দেবো, ড্রেন দিয়ে পানি চলে যাবে।মাঠকর্মী রাখা হবে কি না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি শারীরিক শিক্ষা দপ্তর থেকে জেনে নিতে বলেন।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন বলেন, প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো ক্যাম্পাসে ড্রেন করা হচ্ছে। পুরো ক্যাম্পাসের অংশ হিসেবে আমরা মাঠেও ড্রেন করবো যাতে বৃষ্টি এসে জলাবদ্ধ হতে না পারে। ড্রেন হলে আর কোনো সমস্যা থাকবেনা। 

খেলার মাঠের বেহাল দশা নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো.জিয়া উদ্দিন মন্ডল বলেন, মাঠ শুকালেই পরিষ্কারের কাজে আমরা মাঠে নামবো। মাঠের বিষয়ে আমরা বার বার কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি তবু কোনো কাজ হচ্ছেনা। আমরা আবারও ভিসি স্যার কে জানাবো।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত