বগুড়ার মহাস্থানে রূপালী ব্যাংকে জালিয়াতি করে দুই কোটি ৬৯ লাখ এক হাজার ৮০১ টাকা আত্মসাতের মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রূপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখার সাবেক ম্যানেজার জোবায়নুর রহমানকে তিনটি ধারায় ২৭ বছর, ব্যাংকের অপর কর্মকর্তা আসামি ইসরাত জাহানকে পাঁচ বছর, আসামি মহাতাবকে পাঁচ বছর, আসামি আজমল হোসেন, জাহিদুর রহমান মোশারফ হোসেনের প্রত্যেকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার দুপুরে জেলা বগুড়ার বিজ্ঞ স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ শহিদল্লাহ জনাকীর্ণ আদালতে সকল আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। সেই সাথে আসামিগণের নিকট হইতে সমহারে জালিয়াতির ঘটনায় তস্রুকৃত সমূদয় অর্থ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
স্পেশাল কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল ব্যাংকে এফডিআর করা কয়েকজন গ্রাহক তাদের টাকার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন একাউন্টে কোন টাকা নেই। পরদিন পরদিন থেকে শাখা ব্যবস্থাপক জোবায়ুর রহমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর টাকা তোর সাথে ঘটনা প্রকাশ হলে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে তদন্ত করে জানতে পারেন উল্লেখিত পরিমাণ টাকা তসরুপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের তৎকালীন ডিজিএম হাবিবুর রহমান সরদার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক রবীন্দ্রনাথ চাকি উক্ত ঘটনা তদন্ত করে
ঘটনার সত্যতা পান ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে ব্যাংক ম্যানেজারসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তদন্তে বলা হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান হাটের ব্যবসায়ী আজমল হোসেন, ঠিকাদার জাহিদুর রহমান ও মোশারফ হোসেন রূপালী ব্যাংক মহাস্থান গড় শাখার গ্রাহক। তারা মহাস্থান হাট ইজারার জন্য ২০১৭ সালের ৬ ও ৯ এপ্রিল শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে রূপালী ব্যাংক মহাস্থান গড় শাখায় দুই কোটি ৬৯ লাখ এক হাজার ৮০১ টাকা মূল্যের সাতটি পে-অর্ডারের জন্য আবেদন করেন।
কিন্তু তারা মাত্র একটি পে-অর্ডারের জন্য ৯ লাখ সাত হাজার ২৫ টাকা ব্যাংকে জমা দেন। এরপরেও তাদের নামে দুই কোটি ৬৯ লাখ এক হাজার ৮০১ টাকা মূল্যের সাতটি পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। এরপর একই বছরের ১১এপ্রিল শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পে-অর্ডারের ওই টাকা সরকারি খাতে জমা করার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু এরই মধ্যে জোবায়নুর আত্মগোপন করেন। পরে র্যাব সদস্যরা শরীয়তপুর জেলা থেকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া দুই কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন ও কায়দে আজমকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা রূপালী ব্যাংক লিমিটেড মহাস্থানগড় শাখার উক্ত পরিমাণ টাকা আত্মসাথের কথা বিজ্ঞ আদালত ও তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট স্বীকার করেন। উল্লেখ্য, মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আসামী কায়দে আজমে মৃত্যু হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পুলিশ স্কটের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।