একে অপরকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রেমিক-প্রেমিকা। গত শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেতুয়া এলাকায়। এ সময় প্রেমিকা ছিলেন দেশে স্বামীর বাড়িতে। অন্যদিকে, প্রেমিক ছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে।
জানা গেছে, পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে। এসময় লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুটও জব্দ করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম।
নিহত গৃহবধূ খাদিজা আক্তার উর্মি। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার মাটিয়ারা গ্রামের জামাল হোসেনের মেয়ে। চৌয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন তিনি। অপরদিকে, ভিডিও কলে যুক্ত থাকা নিহত ওমান প্রবাসী প্রেমিক সাফায়েত হোসেন (২৩)। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে।
জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রং মিস্ত্রী আরিফুর রহমানের সাথে খাদিজার বিয়ে হয়। বাল্য বিয়ে হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান আতঙ্কে ঘরোয়াভাবে গোপনে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
পুলিশের উদ্ধার করা চিরকুটে লেখা ছিল, চাইছিলাম দু’জনে একসাথে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না, আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর পরিবারকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম, ওরেও আমার সাথে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা। বাবা-মা, ভাই বোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু থাকতে দেয় নাই আমাদের দাফনটা যেন একসাথে হয়। একদিন আগে পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে।
নিহত উর্মির মা নুরুন্নাহার জানান, গত ১৪ অক্টোবর আমাদের আত্মীয় বেতুয়ার আরিফুর রহমানের সাথে মেয়েকে বিয়ে দিই। বিয়ের পর মেয়ে স্বামীর বাড়িতে হাসি খুশিতেই ছিল। শনিবার রাতে হঠাৎ শুনি উর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়েত ভিডিও কলে আত্মহত্যা করেছে।
প্রবাসী সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক বলেন, একবছর আগে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে ছেলে হঠাৎ বিদেশে কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনলাম ফেসবুক মেসেঞ্জারে আমার ছেলের সাথে উর্মি নামের এক মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে আমার ছেলের সাথে ভিডিও কলে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।