কর্ণফুলী নদীর পাড়ের বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে রাউজানের বিএনপি কর্মী ও ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমকে (৫৫) টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করানো হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডে সন্ত্রাসীদের দুটি দল অংশ নেয়। ঘটনায় জড়িত চার জনকে গ্রেফতারের পর তাদের জবানবন্দি ও জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পায় পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতার চার জন হলেন- মো. মারুফ, মো. আবদুল্লাহ খোকন (প্রকাশ ল্যাংড়া খোকন), মো. সাকলাইন হোসেন ও জিয়াউর রহমান। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি রাউজান উপজেলায়।
পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর আবদুল হাকিম প্রাইভেটকারে নগর থেকে তার গ্রাম রাউজানের বাগোয়ানের হামিম অ্যাগ্রো ফার্মে যান। বিকালে চট্টগ্রাম শহরে ফেরার পথে মদুনাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে তার গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে আবদুল হাকিমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার গাড়িচালকও গুলিবদ্ধ হন।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তের সূত্র ধরে ৩১ অক্টোবর রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীব উল্লাহপাড়া এলাকা থেকে মো. আবদুল্লাহ খোকনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হাকিম হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে জবানবন্দি দেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকা থেকে মো. মারুফকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে সাকলাইন হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দেশি তৈরি একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। একইদিন জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের চার জনের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, আবদুল হাকিমকে গুলি করে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। মূলত রাউজান থানাধীন বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। টাকার বিনিময়ে সন্ত্রাসীদের দুটি পক্ষ এতে অংশ নিয়েছিল। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীসহ ঘটনায় জড়িত আরও ১০-১২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।’