কক্সবাজারের টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও আরাফাত রহমান কোকা ক্রীড়া সংসদের সভাপতি মো. ইউনুছ সিকদারকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে টেকনাফ থানার সামনে উত্তাল প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত ইউনুছ সিকদারের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মো. আলম প্রকাশ শফিয়া, মোঃ হারুন, সাইফুল করিম, রেজাউল করিম, আলী মোহাম্মদ ফোরকান, ইফতেখার আহমেদ মাসুম, নুরুল আবছার ও আলী জোহারসহ মোট আটজনকে নামীয় আসামি করা হয়েছে এবং আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মামলাটি টেকনাফ থানায় নম্বর ৩০ হিসেবে নথিভুক্ত এবং জি.আর. নং–৭৯৯/২৫ হিসেবে রেজিস্ট্রিকৃত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৬৫/৩৮৫/৩০২/২০১/৩৭৯/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একজন জনবান্ধব জনপ্রতিনিধিকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও খুনিরা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আমরা খুনিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
বক্তারা আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করতে হবে এবং অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাতে এই জনপদে আর কেউ এমন হত্যার শিকার না হন।
তারা আরও দাবি জানান, টেকনাফে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এলাকায় অপরাধ দমন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
এসময় উপস্থিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, টেকনাফ পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুর রজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বাবলু, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস শুক্কুর, সাবরাং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম, ছাত্র-প্রতিনিধি রবিউল হাসান, মোরশেদ আলম, রুয়ায়েত হোসাইন ও আব্দুল আজিজ প্রমুখ।
পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার বিকেলে দাওয়াতের কথা বলে ইউনুস মেম্বারকে রঙ্গিখালীতে ডেকে নিয়ে যান কোকো ক্রীড়া সংসদের টেকনাফ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আলম। তখন সন্ধ্যার মধ্যে ফেরার কথা থাকলেও পরের দিন ভোরে তিনি মরদেহ হিসেবে বাড়ি ফিরেন। পরিবার চায় বাবার নৃশংস হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক।
এসময় মানববন্ধনে টেকনাফ উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি, উপজেলা যুবদল, পৌর যুবদল, উপজেলা ছাত্রদল, পৌর ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং টেকনাফের সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় উপস্থিত জনতার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ নূর বলেন, এই ঘটনায় আমরা দিন রাত এক করে কাজ করে যাচ্ছি। আমরাও এ হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে মর্মাহত। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর রাতে আরাফাত রহমান কোকোর ফোনে ইউনুছ সিকদার বাড়ি থেকে বের হন। পরদিন (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে টেকনাফ-কক্সবাজার মহাসড়কের হ্নীলা রঙ্গিখালী ব্রিজের নিচ থেকে তার মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।