নীলফামারী জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দীর্ঘ ১৪মাস ধরে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে সেবা দিয়ে আসলেও,দিতে পারছে না কোন ঔষধ। সীমান্তবর্তী দু’টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০হাজার জনসংখ্যার একমাত্র স্বাস্থ্য সেবার নির্ভরশীল মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি বিলুপ্ত হওয়ার পর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নাম সর্বস্ব চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।
মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি বিলুপ্ত হওয়ার পর, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি একসময় ছিল স্থানীয় জনগণের নির্ভরতার স্থান। এখান থেকে নিয়মিতভাবে রোগীরা ঔষধ সংগ্রহ করতো। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীরা বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরামর্শ পেতেন।কিন্তু বর্তমানে সেই চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্বল্প পরিমাণ ঔষধ আসলেও কয়েক দিনের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যেত। এছাড়া স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা ও আয়া পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় গর্ভবতী নারীরা নিয়মিত চেকআপ করাতে পারছে না। বর্তমানে পলাশ চন্দ্র নামে একজন ফার্মাসিস্ট ও শাহাদাত হোসেন নামে একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক দায়িত্ব পালন করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২৫ কিলোমিটার দুরত্বে রয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এক মাত্র ভরসা। সেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ফার্মাসিস্ট পলাশ চন্দ্র দায়িত্বে থাকলেও ঔষধ দিতে পারছে না। এমনকি কৃমির ঔষধও মজুত নেই বলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা আগন্তকদের জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আগে এখানে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা আসতো, আমরা চিকিৎসা ও ঔষধ পেতাম। এমনকি একসময় এখানে নরমাল ডেলিভারিও হতো। এখন কিছুই নেই, শুধু ভবনটা পড়ে আছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্র্রটির ছাদে ছাগল পালন করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দ্বিতীয়তলাটি তিনি দখল করে রেখেছে। নিচতলায় হাসপাতালের আসবাবপত্র অগোছালো ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে আছে। এমনকি হাসপাতালের সামনে ছাগলের খাদ্যের জন্য ঘাসও চাষ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, এখানে শুধু একজন ফার্মাসিস্ট রয়েছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা ও আয়া পদ দুটি দীর্ঘদিন ধরে খালি। ফলে সেবা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। রংপুর থেকে ঔষধ আসার কথা থাকলেও এখনো পৌঁছায়নি। স্থানীয় সাংবাদিকদের অনুরোধে কৃমির ঔষধ দিতে না পেরে তিনি জানান, ঔষধ শেষ হয়ে গেছে।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. সোহেল রানা জানান, গত ১৪মাস ধরে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ ছিলো। এ মাসে কিছু ঔষধ এসেছে,যা সরবরাহ করা হচ্ছে। নিয়মিত ঔষধ সরবরাহ ও শূন্যপদে লোকবল পোস্টিং হলে সেবার মান আগের মতোই স্বাভাবিক করা হবে।এবং ছাগল পালনের বিষয়ে শুনেছেন বলে তিনি বলেন,ওই ফার্মাসিস্টকে ছাগল সরাতে বলা হয়েছে।