জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ সোমবা রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বেলা ১১টায় বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করবে।
মামলার প্রধান আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; তার সঙ্গে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এদের মধ্যে শুধুমাত্র মামুন গ্রেপ্তার অবস্থায় রয়েছেন এবং তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে ইতোমধ্যে জবানবন্দি দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক।
রায় উপলক্ষে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানিয়েছে। এ রায় বাংলাদেশ টেলিভিশন বিটিভি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
গত ১ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটররা। অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান, আন্দোলন দমাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা, রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। এ অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম মামলাটি হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। পরে ধারাবাহিকভাবে মামুন ও আসাদুজ্জামানকে আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা পড়ে ১২ মে। এরপর ১২ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত যুক্তিতর্ক চলে। যুক্তিতর্কে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। আর রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তাদের খালাস চেয়ে যুক্তি তুলে ধরেন। রাজসাক্ষী মামুনের পক্ষ থেকেও খালাসের আবেদন করা হয়।
আজকের রায়ের মধ্য দিয়ে পুনর্গঠিত এই ট্রাইব্যুনালের সবচেয়ে আলোচিত মামলার বিচারিক অধ্যায় সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।