দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে পরীক্ষামুলক আঙ্গুর চাষ। আঙ্গুরচাষের ্অপার সম্ভাবনা। শখ করে লাগানো আঙ্গুরের বাম্পার ফলন হয়েছে।
বাড়ির টিনের চালার উপরে মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলে আছে সবুজ আঙ্গুর। যা নজর কাড়ছে সকলের। স্বাদ এবং সাইজে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও, শখের বসে অনেকেই আঙ্গুর দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন বাড়িটিতে। নজরকাড়া এই আঙ্গুরের দেখা মিলবে ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার রাজবাড়ী আশ্রয়ন প্রকল্পে।
সেখানে বসবাস করা রিক্সা চালক ময়নূল ইসলাম গত ২ বছর আগে ২০২২ সালে শখের বসে স্থানীয় একটি নার্সারী থেকে একটি আঙ্গুরের চারা নিয়ে এসে বাড়ির কোণে রোপন করেছিলেন। গত বছর গাছে দেখা মেলে অবিশ্বাস্য আঙ্গুরের। এক বছর বয়সী গাছ থেকে এসেছিল প্রায় ১ মণ আঙ্গুর। এ বছর তার তুলনায় দ্বিগুণ ফল এসেছে।
লালমাটি আঙ্গুরের বাম্পার ফলনে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। স্থানীয় মাটিতে অনেকেই শখের বসে আঙ্গুরের চারা রোপন করলেও, ভালো ফলন না হওয়ায় এবং স্বাদে পার্থক্য থাকায় শেষ পর্যন্ত কেটে ফেলতে বাধ্য হয়েছে। তবে এই প্রথম লালমাটিতে আঙ্গুরের চারা রোপন করে বাম্পার ফলনের মুখ দেখেছেন রিক্সাচালক ময়নূল।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বারান্দায় টিনের চালার উপর থোকায় থোকায় ঝুলে আছে আঙ্গুর। টিনের উপরে বাঁশের মাচা তৈরি করেছেন বাড়ির মালিক। আঙ্গুরের ভাড়ে ঝুলে পড়েছে গাছের লতা। বাজারের তুলনায় গাছটিতে থাকা আঙ্গুরের সাইজ কিছুটা ছোট। স্বাদেও রয়েছে কিছুটা ভিন্নতা।
বাড়িতে আঙ্গুরের গাছ দেখতে এবং আঙ্গুর খেতে এসেছিলেন কয়েকজন তরুন। তাদের একজন আলিম। তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় আঙ্গুরের এমন ফলন দেখে আমি অবাক। বাজার থেকে যে আঙ্গুর কিনে খাই, সেই তুলনায় এই আঙ্গুরের স্বাদ কিছুটা টক। তবে যে পরিমান আঙ্গুর ধরেছে। শুধু দেখতেই ইচ্ছে করছে।
রাব্বি মিয়া নামে একজন বলেন, একটি গাছে এত আঙ্গুর ধরে তা আজ আমি প্রথম দেখলাম। কাঁচা অবস্থায় কিছুটা টক। তবে একেবারে পরিপক্ব হলে টক অনেকাংশ কমে যাবে। আমিও বাড়িতে এই আঙ্গুর চারা রোপন করবো।
আঙ্গুর চাষী ময়নূল ইসলাম বলেন, গতবার কাঁচা অবস্থাতেই সব আঙ্গুর প্রতিবেশীদেরকে খাইয়েছি। এবারও আমি আঙ্গুর বাজারে বিক্রি করবো না। পরিপক্ক হলে সবার মাঝে বিলিয়ে দেব। এটি আমার শখের ফল। অনেকেই আমার আঙ্গুর গাছ দেখার জন্য আমার বাড়িতে আসছে। আগামীতে বানিজ্যিক ভাবে আঙ্গুর চাষের পরিকল্পনা আছে।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, এই অ লের মাটি ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। তবে লাল মাটিতে আঙ্গুর চাষ অবিশ্বাস্য। যথাযথ ভাবে পরিচর্যা করলে ফলের স্বাদ এবং সাইজ বাজারের আঙ্গুরের আশপাশে থাকবে। আমরা নতুন চাষীদেরকে সবধরণের পরামর্শ প্রদান করছি। এই মাটিতে যদি আঙ্গুর চাষে সাফল্য পাওয়া যায়, তবে আগামীতে সরকারী ভাবে পরীক্ষামূলক আঙ্গুর চাষের জন্য প্রদর্শনী দেওয়া হবে।