কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতাকে সার্বিকভাবে অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে সংঘর্ষে হতাহতদের প্রতি শোক ও সমবেদনা এবং এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একইসাথে সরকারের কাছে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের জোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মমিন উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান এর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমরা গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সাথে লক্ষ্য করছি যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে, যা সার্বিকভাবে অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, মর্মাহত ও শোকাহত এবং এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। উক্ত সহিংসতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আহত সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রতি আমরা সমবেদনা প্রকাশ করছি ও তাঁদের দ্রুত আরগ্য কামনা - করছি; এবং নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সহিংস ঘটনায় পরিণত করে যে স্বার্থান্বেষী মহল দেশব্যাপী নৈরাজ্য ও অরাজকতা সৃষ্টি করেছে এবং কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটিয়েছে জবি শিক্ষক সমিতি বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে। একইসাথে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যে সকল নিরপরাধ শিক্ষক-শিক্ষার্থী হতাহত হয়েছেন রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের সকলের সুচিকিৎসা ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করারও দাবি জানাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
এতে আরো বলা হয়েছে, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অদ্য (১৭ জুলাই ২০২৪) জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, "আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে। তাদের হতাশ হতে হবে না।" মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উক্ত বক্তব্যের উপর আস্থা রেখে চলমান সংকটের দ্রুত নিরসন হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
প্রচলিত কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার চেয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি প্রচলিত কোটা ব্যবস্থার দ্রুত যৌক্তিক ও আইনানুগ সংস্কার করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সরকারি চাকরিতে সমতার সুযোগ সৃষ্টির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
একইসাথে ত্রিশ লক্ষ বীর শহিদের আত্মত্মত্যাগ এবং দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান হানি হয় এমন কর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি'র পক্ষ থেকে সকলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।