শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫ ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত কেন্দুয়ার কৃষকরা
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪, ৪:২১ PM
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় পাটচাষি কৃষকরা পাটের আঁশ ছাড়াতে ও শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রথম দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দেওয়া নিয়ে কিছুটা হতাশায় পরলেও পরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দিয়েছেন কৃষকরা। 

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, পাট চাষি কৃষকেরা পাট কেটে তা নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দিয়ে রেখেছেন। কোন কোন জায়গায় দেখা গেছে নারী-পুরুষ মিলে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন। আবার কেউ কেউ ছাড়ানো আঁশ পানিতে পরিষ্কার করে বাঁশের আড় টানিয়ে রোদে শুকাচ্ছেন। 

আঁশ থেকে বের হওয়া পাটশোলা ছোট ছোট আঁটি বেঁধে সারিসারি দাঁড় করিয়ে রেখেছেন শুকাতে। কেউ কেউ শুকনো পাট বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন বিক্রি করতে। সব মিলিয়ে পাটচাষি কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য প্রতি মণ তিন হাজার থেকে ৩ হাজার পাঁচ শত টাকা টাকা  পর্যন্ত। 

কেন্দুয়া  বাজারের পাট ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া জানান, মান অনুযায়ী পাটের মূল্য দেশি (সোতা) ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার  টাকা, কেনাফ, মেস্তা, তুষা ৩ হাজার  থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ন্যায্যমূল্য পেয়ে পাটচাষিদের মাঝে এখন পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর পাটের আবাদও হয়েছে ৫৫০ হেক্টর জমিতে। আর প্রনোদনা হিসাবে ১০০ জন কৃষকের মধ্যে প্রতিজনকে ২ কেজি করে পাট বীজ ও ১০ কেজি করে এমওপি ও ডিএপি সার বিতরণ করা হয়। তা ছাড়া পাট মন্ত্রণালয় উপজেলায় ২৫০ জন কৃষকের মধ্যে প্রত্যেককে ২ কেজি করে পাট বীজ সহায়তা করেছে।

কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের  কৃষক সুলতান মাহমুদ জানান, তিন কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না। 

আরেক কৃষক ফজলুল হক জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি কম হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে পরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলনও ভালো হয়েছে। পাটচাষি কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাট চাষ একটি লাভজনক ফসল।

শুরুতেই একটু ঘনভাবে বীজ বপণ করলে তিন ধাপে অর্থ অর্জন করা যায়। বাজারে পাটশাকের ব্যাপক চাহিদা। তেমনি জ্বালানি হিসেবে পাট শোলারও চাহিদা রয়েছে। বর্তমান বাজারে ৭০০ টাকা মণ প্রতি পাটশোলা। প্রতি কাঠা জমিতে ৩-৪ মণ পাটশোলা পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে পাট চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়াও এবছর পাটের ন্যায্যমূল্য পেয়ে চাষিদের মাঝে পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, এউপজেলায় সোনালী আঁশ পাটের চাহিদা কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তোষা ও দেশি জাতের পাটের আবাদই বেশি করেন এএলাকার কৃষকরা। 

এলাকার কৃষকরা যাতে সকল জাতের পাট আবাদে আগ্রহী হয় ও যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারে এ জন্য প্রতিনিয়ত কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান করেছেন কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছেন কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত