পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় এক সপ্তাহে এক কিশোরী, এক নারীসহ এক পুরুষের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রতিটি মৃত্যু আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হলেও কোনোটির কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঘটনাগুলোতে তিনটি অপমৃত্যুর মামলা হলেও বাদি হয়ে কেউ মামলা করেন নাই। পুলিশের ভাষ্য, অভিযোগ পেলেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।
গত ১৯ মে সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া কুলসুম আক্তার নামে এক কিশোরী গলায় ওড়ান পেঁচিয়ে আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়।
জানা যায়, কিশোরীটি রতনদী তালতলী ইউনিয়ের কাছারিকান্দা গ্রামে নানাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছিলো। ঘটনার দিন নানীর সঙ্গে তর্ক হয়। এর পরে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। তবে এর বাইরে আর কোনো তথ্য সামনে আসেনি। কিশোরীটির মা-বাবা ঢাকায় থাকেন, তারা কেউই থানায় অভিযোগ দেন নাই।
২১ মে গলাচিপা পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা খোকন দাস নামে এক বই বিক্রেতার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন রাত ৯টার দিকে নিজ লাইব্রেরি থেকে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, খোকন দীর্ঘদিন ধরে লাইব্রেরির ব্যবসা করে আসছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে নানা লোকের কাছ থেকে সুদে টাকা আনতেন। টাকা সময় মতো ফেরত দিতে না পারায় ২০ মে এক নারীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। পরের দিন সকালে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হন তিনি। এরপর আর ফেরেন নাই। স্বজনরা অনেক খোঁজের পর রাতে নিজ দোকান থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন।
তারা জানান, এসময় মরদেহের কাছ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। এতে লেখা ছিল- ‘রেখা ও হামিদার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গলায় দড়ি দিতে বাধ্য হই।’
এদিকে এ ঘটনায়ও পরিবারের কেউ এখনও থানায় অভিযোগ করেন নাই।
অপরদিকে ২৩ মে রাহিমা বেগম নামে এক নারীকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই নারী উপজেলার হাওলা গ্রামের মোটরসাইকেল চালক রেজাউলের দ্বিতীয় স্ত্রী। ঘটনার দিন রেজাউল তাকে হাসপাতালে এনেছিলেন। চিকিৎসক মৃত ঘোষণার রেজাউল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
তবে হাসপাতালে উপস্থিত রেজাউলের মা দাবি করেন, রাহিমা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। যদিও রাহিমার বাবার দাবি, মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তবে থানায় এখনও অভিযোগ দেন নাই।
এদিকে ময়নাতদন্তের পর রাহিমার দাফন হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ থানায় অভিযোগ জানান নাই।
থানায় তিনটি অপমৃত্যুর মামলা হলেও কোনো অভিযান না পড়ায় এলাকায় এ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। প্রশ্ন উঠছে মৃত্যুর কারণ নিয়েও।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমান জানান, এ সপ্তাহে তিন ঘটনায় তিনটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে কেউ অভিযোগ করলে খতিয়ে দেখা হবে।