জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেছেন, আমরা দেখছি কিছু দল, কিছু মানুষ তারা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সজাগ, তারা তাদের ১৫ বছরের ক্ষুধা মেটানোর জন্য মাঠে উঠে পড়ে লেগেছে। প্রত্যেকটা ঘাটে তারা চাঁদাবাজি করছে, মানুষের ভাতার কার্ড নিয়ে তারা চাঁদাবাজি করছে, রেশন নিয়ে চাঁদাবাজি করছে। অসংখ্য জায়গায় তারা তাদের দখল বসিয়ে রেখেছে। তাদের এ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে, আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে।
ভোলা সদরের শিল্পকলা একাডেমিতে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অভ্যুত্থানের শক্তি, আহত ও শহীদ পরিবারের সঙ্গে তরুণ নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটির রাইজিং মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সামান্তা শারমিন বলেন, আমাদের দেশের ২ হাজার মানুষ জীবন দিয়েছেন। এ প্রক্রিয়া চলতে থাকলে তাদের জীবন বৃথা। এই ২ হাজার মানুষকে আমরা কী করে জবাব দেব, আমরা জানি তাদের জবাব দিতে হবে। তাদেরকে জবাবের যৌক্তিত জায়গাতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধের একটা রূপ আমরা দেখেছি অভ্যুত্থানের সময়ে, অভ্যুত্থানের সময়ে আমাদের কোনো রাজনৈতিক, ধর্মীয় মতের পরিচয় ছিল না। কিন্তু অভ্যুত্থানের ৬ মাস পরে আমরা দেখছি এখানে রাজনৈতিক, ধর্ম, বর্ণের পরিচয় মুখ্য হয়ে উঠছে। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই- আমাদের বিভাজনের এ চেষ্টা আমরা রুখে দিব, আপনারা কেউ বাংলাদেশের প্রশ্নে বিভাজিত হবেন না।
তিনি আরও বলেন, এখন দেখবেন অনেকেই নির্বাচনের সিস্টেম নিয়ে কথা বলছে। তরুণ জনগোষ্ঠী জীবন দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। যারা জীবন দিয়েছে তারা নির্বাচন করবে না তো কারা করবে? যারা ১৫ বছরেও নিজেদের চেহারাটা দেখাতে পারেনি, বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি তারা গিয়ে নির্বাচন করবে, আমরা সেটা মেনে নেব না। যে তরুণ জনগোষ্ঠীর জীবনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, সে তরুণ জনগোষ্ঠীর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন কাঠামো পাব। আমরা সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবনায় বলেছিলাম ২১ বছরেই নমিনেশন পেতে পারে, কারণ আমরা চাই এ বাংলাদেশে যত রাজনৈতিক দল আছে তারা তরুণ জনগোষ্ঠীকে ক্যাডার হিসেবে ব্যবহার করা বন্ধ হয়ে যাক। বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠী অল্প বয়সেই যাতে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে মাঠে নামতে পারে।
সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করছি, সে চেষ্টা সফল করার দিকে যেন যেতে পারি। কিন্তু দেখবেন এ চেষ্টা সফল করার পথে অনেকগুলো বাধা। সবচেয়ে বড় বাধাগুলো দেবে এখানে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো। তারা চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব করে আপনাদের জীবন অতিষ্ট করে ফেলবে, আপনাদের জীবনের প্রতি তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। আপনাদের জীবনের প্রতি দায়-দায়িত্ব রয়েছে যারা জীবন দিয়ে দায়িত্ব নিয়ে এ অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। তাদের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা সামনের দিনে বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করবে এবং এ আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে ৬ মাস তরুণদের নিয়ে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে তরুণ জনগোষ্ঠীর যে ধরনের নেতৃত্ব লুকিয়ে আছে তা আমরা খুঁজে বের করব।